খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। এ সময় ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের বিভিন্ন গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় ৭-৮ জন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। জানালা দিয়ে আটক হওয়া এক ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন,আংকেল আমার বাবা-মা কেউ বাড়ি নেই। আমার ছোট বোনকে ঘরের মধ্যে তালা দিয়ে রেখে আসছি। আমার বয়স ১৭ বছর।
তিনি আরও বলেন, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি জানি না আমার সঙ্গে কি হবে। আমি জানিনা আমাকে নিয়ে গিয়ে কিভাবে মারবে তারা। আমাদেরকে হেল্প করেন।
এদিকে অপর এক ছাত্রী জানান, তারা সেখানে কোনো নাশকতা করতে আসেননি। কিন্তু পুলিশ বিনা অপরাধে তাদের গ্রেফতার করে। তিনি জানান, তাদের প্রিজন ভ্যানে ৭-৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন মেয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে বিএমএ কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রয়েল মোড়, শান্তিধাম, মডার্ন ফার্নিচার মোড়, বাতিপাড়া, মৌলভীপাড়া, পিটিআই মোড় থেকে টুটপাড়া কবরস্থান মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা পিটিআই মোড়ে আগুন ধরিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। একপর্যায়ে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে পুলিশ বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে। এর মধ্যে খুলনা সদর থানা পুলিশ ১১ ছাত্রীসহ ৪৬ জনকে, সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ চার ছাত্রীসহ ১৮ জনকে এবং দৌলতপুর থানা পুলিশ ১১ ছাত্রীসহ আটক করেছে।
এ ঘটনার পর খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামাল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, আর কোনো শিক্ষার্থীকে আন্দোলন করতে দেওয়া হবে না। সেই ঘোষণা উপেক্ষা করে বুধবার তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। আমাদের আক্রমণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কতজনকে আটক করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।