ঢাকাই সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা এম.এ. জলিল অনন্ত। তবে ভক্তদের মাঝে ‘অনন্ত জলিল’ হিসেবেই অধিক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। এদিকে সম্প্রতি নতুন একটি সিনেমার শুটিং নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন গুণী এই অভিনেতা। জানা গেছে, এ সিনেমায় নিজের স্ত্রী দেহরক্ষী হিসেবে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাকে। আর এরই জের ধরে এখন থেকেই কঠোর পরিশ্রম করতে শুরু করেছেন তিনি। একই সাথে মানুষ যেন ট্রল না করে সেদিকে খেয়াল রাখছেন তিনি।
সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ‘নেত্রী দ্য লিডার’ চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু হয়েছে। এতে নেত্রী রূপে ধরা দেবেন চিত্রনায়িকা বর্ষা। এই চলচ্চিত্রের আয়োজন নিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছে অসম্ভবকে সম্ভব করা এই নায়কের।
মাথা খারাপের কারণ জিজ্ঞাসা করলে অনন্ত জলিলের ভাষ্য, সিনেমায় অভিনয় করছি, প্রডিউস করছি। পাশাপাশি কনসেপ্ট ও কস্টিউমের কাজও আমি করছি। সব ম্যানেজমেন্ট দেখাশোনা- মাথাটা কিভাবে ভালো থাকে বলেন?’
তবে অনন্ত জলিলের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা তার চরিত্র নিয়ে। এই সিনেমায় নেত্রীকে প্রোটেকশন দেয়া তার কাজ। আর তাই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা আমি রাতেও চিন্তা করি। ধরেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বডিগার্ড আছে, তাদের কী এক্টিভিটিস থাকে, তারা কীভাবে কাজ করে, আমি কী সেভাবে করতে পারতেছি কি না। এগুলো নিয়ে চিন্তা করি। তারা কীভাবে দাঁড়ায়। তাকে কোথাও যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করলে কীভাবে হাতটা দেখায়। এগুলো নিয়ে আমি খুব টেনশনে আছি, মানুষ যেন আবার ট্রল না করে যে এগুলো হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা সত্যি খুব চ্যালেঞ্জিং একটা ক্যারেক্টার। নেত্রীকে সব সময় প্রোটেকশন দেয়া, নেত্রীকে সব সময় রেসপেক্ট করা আমার দ্বারা হচ্ছে কি না, এগুলো ভাবছি আর করে যাচ্ছি। সঙ্গে আমার মাথায় তো ধরেন অনেক কিছু কাজ করে, শট দেয়ার সময় থাকে না। সিনেমার স্ক্রিপ্ট আমার লেখা, ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ না, একদম শতভাগ আমার অ্যারেঞ্জমেন্ট করা।’
আক্ষেপ থাকলেও অনন্ত জলিলের কথা শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শেষ হয়। নিজের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আসলে আমি তো সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতেই ভালোবাসি। এটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র, আর এ জন্য আমাকে খাটতে হচ্ছে প্রচুর। ঘুমানোর আগেও চরিত্রটি নিয়ে ভাবছি, কতটা সুনিপুণভাবে পর্দায় চরিত্রটির রূপদান করা যায় ভেতরে ভেতরে সেই তাগিদ অনুভব করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক মাস ধরে আমি সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি নাই শুধু এই ছবির জন্য। এতে আমি নেত্রীর দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করছি। আফসোস হচ্ছিল, এই চরিত্রে আমার তেমন নতুন কস্টিউম নাই। দেখছি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দেহরক্ষী হিসেবে যারা কাজ করেন তাদের আচরণ, পোশাক কেমন।’
খোঁজ দ্য সার্চ খ্যাত এই নায়ক যোগ করেন, ”মানুষ যেন ট্রল না করে সেদিকে খেয়াল রাখছি। মানুষের বোঝা উচিত, এত বড় ইন্টারন্যাশনাল মানের সিনেমা করতে কতটা পরিশ্রম ও আয়োজন রাখা উচিত। বেটার লোকেশনের জন্য কিছু শুটিং চেন্নাইতে করেছি। বাংলাদেশের অংশ শেষ করে তুরস্কে শুটিং করব। সেখানে বাকি ৫০ শতাংশ শুটিং শেষ হবে। শুটিং শেষ না হলে বলা যাবে না ‘নেত্রী’ সিনেমার বাজেট আসলে কত!”
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে ‘খোঁজ-দ্যা সার্চ’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন অনন্ত জলিল। তবে পরবর্তীতে ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ সিনেমার মাধ্যমকে দর্শকদের নজরে আসেন তিনি। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি একজন চলচ্চিত্র পরিচালক ও ব্যবসায়ী হিসেবেও বেশ খ্যাতি রয়েছে তার।