এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে জিপিএর যুগ। ২০২৬ সাল থেকে, এর বদলে নতুন ৭টি সূচকে করা হবে মূল্যায়ন। যে শ্রেণীতে নতুন পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে, সেখানে মূল্যায়ন একই হবে। লিখিত অংশের ওয়েটেজ হবে ৬৫ শতাংশ এবং বাকি ৩৫ শতাংশ হবে কার্যকলাপভিত্তিক।
একটা সময় ম্যাট্রিকুলেশন এক্সাম বদলে হয় সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট এক্সাম। আর সেসব পরীক্ষার মূল্যায়নে আসে পরিবর্তন। ডিভিশনের ফলাফল পদ্ধতি বদলে হয় সিজিপিএ।
নতুন পাঠ্যক্রমের সময় মূল্যায়নে পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা সাতটি সূচকে ফলাফল পাবে। শীর্ষ স্তরটি অনন্য, এবং সর্বনিম্ন স্তরটি প্রারম্ভিক। রিপোর্ট কার্ডে শিক্ষার্থীর দৈনিক শিক্ষার মূল্যায়ন এবং পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন উভয়ই থাকবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, একজন শিক্ষার্থী ৭০ শতাংশ শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করলে সে ওখানেই ফেল করবে। দুটার বেশি বিষয়ে বিকাশমান পর্যায় আছে তাকেও আমরা অনুত্তীর্ণ বলছি। যে একটা বিষয়ে প্রারম্ভিকে আছে তাকেও আমরা অনুত্তীর্ণ বলছি। ফেল করার যেমন শর্ত আছে তেমনি পাশ করার ক্ষেত্রেও কিছু কিছু আছে এমনিতেই পাশ, কিছু কিছু আছে শর্ত সাপেক্ষে পাশ।
বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষার সময়ও। সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত অর্থাৎ একটি স্কুল দিবস। এতে লিখিত অংশের ওয়েটেজ থাকবে ৬৫ শতাংশ, বাকি ৩৫ শতাংশ হবে কার্যক্রমভিত্তিক।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থী পোস্টার, ওয়াল আর্ট তৈরি করে এবং এগুলো তার মূল্যায়নের অংশ। সেগুলো থেকে তার একটা মার্কিং হয় শিখনকালীন মূল্যায়ন। এছাড়া শিক্ষার্থীকে ৬ মাস পরে একবার বা বছর শেষে একবার যে মূল্যায়নটা করা হয় সারাবছরেরটাকে নিয়ে সেটাকে আমরা বলি ষামষ্টিক মূল্যায়ন। ষামষ্টিক মূল্যায়নের সময়ও তাকে এরকম কিছু এক্সপেরিয়েন্স দেয়া হয়, এখানে সে কিছু কাজ করে কিছু লিখে। এই দুটোকে মিলিয়েই ওই ৩৫ শতাংশ ও ৬৫ শতাংশ ওয়েটেজে তাকে মূল্যায়ন করা হয়।
তবে, এই অধ্যাপক বলেন, যেহেতু এই নতুন মূল্যায়নের প্রতিটি সূচক ইতিবাচক বলে মনে হচ্ছে, এটি বুঝতে খাবি খেতে পারেন অংশীজনরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মজিবুর রহমান বলেন, সমাজে এর প্রভাব পড়বে। আগে বাবা-মা তারপর চাকরির খাত। তাদের সঙ্গে কি আপনি বসেছেন, তাদের সঙ্গে কি আপনার কথা হয়েছে? তারা কি এটা মেনে নিয়েছেন? এই সমস্যাগুলো আগেই কিন্তু সমাধান করে ফেলা প্রয়োজন ছিল। নামকাওয়াস্তে তারা কিছুটাতে করেছে। এটা কিন্তু কোটি কোটি মানুষকে রিপ্রেজেন্ট করে না। এখন আবার বলছে পাইলটিং, আমরা এটা ঠিক করে নেব। আপনি বাচ্চাদের তো গিনিপিগ বানাতে পারেন না।
তিনি বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর প্রস্তুতি না থাকায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন অভিভাবকরা। তাই মূল্যায়ন শুরু করার সময় স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল।