বর্তমান সময়ে বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির সাথে তাল মিয়ে বাংলাদেশ দেশও ক্রমশই এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের দিকে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রযুক্তির একটি অংশ। এই মাধ্যেমে খুব সহজেই দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত অর্থ আদান-প্রদান করা সম্ভব। সম্প্রতি বাংলাদেশে এই সেবা বেশ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এই সেবার প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা জানালেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগের বড় চালিকাশক্তি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস)। এ মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটির বেশি এমএফএস অ্যাকাউন্ট এবং দুই হাজার কোটি টাকা দৈনিক লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশেই নারী। এটা আমাদের জন্য দারুণ খবর।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) নগরীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের’ গুরুত্ব নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন মন্ত্রী। এম এ মান্নান বলেন, বিশ্বব্যাপী মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকদের বড় সমস্যা হচ্ছে প্র/তা/রণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। বৃহত্তম বাজার হিসেবে বাংলাদেশের বাজারে প্রতা/র/ণা/র হার তুলনামূলক কম, এটা আমাদের জন্য ভালো খবর। তারপরও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। দরকার হয়, প্রতিদিন বিটিভিতে ৫ মিনিট এ সংক্রান্ত সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।’
মোবাইল ব্যাংকিং প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সব কিছুতেই কড়াকড়ি করা উচিত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আছে, সবাই সচেতন হয়ে কাজটি করতে হবে। আমাদের সবার মূল উদ্দেশ্য দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করা। এ জন্য রুট লেভেল থেকে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। গোলটেবিল বৈঠকে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমানে বলেন, আমরা এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মানেই প্রযুক্তির বিপ্লব। প্রযুক্তির দিকে আমাদের এগিযে যেতে হবে। তারপরও কিছু চালাক লোক বিশ্বের সবখানেই থাকেন। চালাক লোকগুলো প্রযুক্তির অপব্যবহারে লিপ্ত হয়। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দুর্বৃত্তায়নের চেষ্টা করলে এদের দমন করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ সেবাকে এগিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আহমেদ জামাল বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। এমএফএসের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা থাকে। এমএফএস, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) এবং পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটরগুলোর (পিএসও) পরিশোধ ও লেনদেন নিষ্পত্তি সেবা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় গ্রাহক বা মার্চেন্টের অর্থকিছু সময়ের জন্য নিজেদের জিম্মায় থাকে। সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ধারণ করা অর্থের নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘গাইডলাইন্স ফর ট্রাস্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ইন পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সার্ভিসেস’ শীর্ষক নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৮ হাজার কোটি টাকা আমাদের জিম্মায় আছে সুতরাং গ্রাহকদের কোনো সমস্যা হবে না মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।’ সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল এস কাদিরসহ সংশ্লিষ্টরা গোলটেবিলে বৈঠকে অংশ নেন।
সরকারের বিভিন্ন খাতেও এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ভাতা এর টাকা এই মাধ্যমে প্রদান করছেন। অবশ্যে এই খাতকে আরও উন্নত করতে বাংলাদেশ সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। এরই লক্ষ্যে কাজ করছে দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিরা।