রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই ভবনে অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ হারিয়েছেন এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন।
তবে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্যালিতে ঘুরতে বাড়ি থেকে বের হন তারা। রাজারবাগ থেকে বাসে ওঠার পরিকল্পনা করে বাসের টিকিটও বুক করেছিলেন রাজস্ব কর্মকর্তা। বাসে ওঠার আগে তারা ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। সেখানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সবাই মারা যান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করেন শাহজালালের শ্বশুর মুক্তার আলম হেলালী। তারা হলেন শাহজালাল উদ্দিন, তার স্ত্রী মেহরুন্নেছা জাহান হেলালী (২৪) ও সাড়ে ৩ বছরের মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিরা।
এ বিষয়ে শাহজালালের সহকর্মী সাব্বির গনমাধ্যমকে বলেন, “শাহজালাল তার স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় থাকতেন। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁওয়ে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কক্সবাজার উখিয়া থানার পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের ছেলে শাহজালাল।’
‘আমি যতটুকু জানি তিনি অফিস থেকে তিন দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল তার। খবরটা শুনে আমরা বাকরুদ্ধ। কি বলব বলেন, এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভানোর পর আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি।
ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভবনটিতে দুটি লিফট এবং একটি সরু সিঁড়ি রয়েছে। কিন্তু কোনো জরুরি ফায়ার এক্সিট ছিল না। ভবনগুলোতে পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ও উচ্ছেদ ব্যবস্থার অভাবে অনেক প্রাণ হারিয়েছে।
বেইলি রোডে যে ভবনে আগুন লেগেছে সেটি সাততলা উঁচু। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামে একটি খাবারের দোকান ছিল। তৃতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছাড়াও উপরের তলায় খাবারের দোকানও ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকতো। অনেকে পরিবার নিয়ে সেখানে খেতেন।