স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নে এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ৫ দিন ধরে অনশন করছেন এক কলেজছাত্রী।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘনশাম এলাকার পুলিশ সদস্য রাব্বী আল মামুনের বাড়িতে তিনি অনশন করছেন। ওই পুলিশ সদস্য ওই এলাকার আল আমিনের ছেলে। তিনি ডিএমপির রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এমটি শাখায় পোমা পদে কর্মরত একজন কনস্টেবল।
মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে ইসলামী শরিয়া আইন অনুযায়ী এক পুলিশ সদস্য রাবির সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। বিয়ের পর পল্টন থানার কাছে একটি আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে এক সপ্তাহ কাটান তারা। পরে, সে তার বাবা-মা এবং তরুণীর বাবার সাথে কথা বলে এবং তারা একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একসাথে থাকার আশ্বাস দিয়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠায়। দুই-তিন মাস পর বাসায় এসে ফোনে কথা বলে এবং ভালো সম্পর্ক বজায় রাখে এবং স্ত্রী হিসেবে ভরন পোষন দেয়। এ সময় তিনি আবারও আশ্বাস দেন, কয়েকদিনের মধ্যে বাড়ি ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে আসবেন।
কিন্তু ৬ মাস পর সে তার মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে ওই তরুণী রাব্বির অফিসে গিয়ে তাকে স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেয়। এরপর নানা আশ্বাস দিয়ে তাকে আবার রংপুরে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এক বছর পর আবারও সব বন্ধন ছিন্ন করেন। এরপর ওই তরুণী নথিটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করলে তারা তাকে স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি আজ কাল করে ওই তরুণীকে আর বাড়িতে নিয়ে যান না এবং স্ত্রীর মর্যাদা দেন না। অবশেষে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে তিনি পুলিশ সদস্য রাব্বির বাড়িতে চলে আসেন।
তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রকিবুল ইসলাম পলাশ জানান, রংপুরের এক মেয়ে গত রোববার দুপুরে রংপুর পুলিশ কনস্টেবল রাব্বির বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে এলে বাড়ির লোকজন দরজা বন্ধ করে দেয়। এবং তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ সময় মেয়েটি বাড়ির দরজার সামনে অবস্থান নেয়।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের নিরাপত্তার জন্য আমি পুলিশকে খবর দিয়েছি এবং রাতে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়েছি। যাতে মেয়েটির কোনো ক্ষতি না হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঢাকায় ওই তরুণীর সঙ্গে আমার যা হয়েছে তা মিটে গেছে। আমি তার সাথে যা করেছি তার জন্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আমাকে শাস্তিও দিয়েছেন। ওই মেয়েকে আমি বাড়িতে উঠতে দেব না বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। আমি কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছি।