একটি ব্রয়লার মুরগির দাম এক টাকা, এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম এক টাকা এমনকি এক ডজন ডিমের দাম মাত্র এক টাকা! এমন কথা শুনে প্রথমে মনে হতে পারে শায়েস্তা খানের রাজত্বের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে বরিশালে এমন বাজার দেখা গেছে।
আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে বরিশাল নগরীর মহিলা ক্লাবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এমন বৈচিত্র্যময় বাজারের আয়োজন করা হয়।
এই বাজারে ১৮টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে যেকোনো দশটি পণ্য বাছাই করে ব্যাগভর্তি বাজার করতে পারবেন গ্রাহকরা।
সুবিধাভোগীরা জানান, বর্তমান বাজারে ১০ টাকায় ডিম পাওয়া কঠিন; সেখানে দশটি পণ্য পেয়ে তারা খুশি। এমন আয়োজন রোজার মাসে বাজার নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা কমিয়েছে বলেও জানান তারা।
রফিক নামের এক সুবিধাভোগী বলেন, আমি রিকশা চালাই। রমজানে এদেশে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এখানে ১০ টাকায় প্রায় ১৫০০ টাকার পন্য কিনলাম। এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। যে বাজার করেছি এতে গত ২০ দিনে আর কোনো চিন্তা নেই। এমন আয়োজন আরও চাই।
তাসলিমা নামের এক সুবিধাভোগী বলেন, স্বামী অসুস্থ, বাড়ি বাড়ি কাজ করে একা পাঁচ জনের সংসার চালাই। রমজান সত্যিই আমাদের চিন্তায় ফেলে দেয়। সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ১০ টাকায় ১৮টি পণ্যের মধ্যে থেকে দশটি পণ্য কিনেছি। এখন আর কোনো চিন্তা নেই।
আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর রমজান এলেই জিনিসপত্রের দাম সীমাহীন বেড়ে যায়; যা মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। এখানে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে মোট ১৮টি পণ্যের মধ্যে বাছাই করে ১০টি পণ্য নিতে পারছেন একটি নিম্ন আয়ের পরিবার। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় দেড় হাজার টাকা। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বরিশালের জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনদীপ ঘরাই বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এবার রমজান মাসে বাজারে পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক। আসন্ন রমজানে ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এমন আয়োজনে বরিশালের দুই শতাধিক স্বল্প আয়ের পরিবার বাজার করেছে।