বর্তমান সময়ে আলোচনায় আসা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে তার দল আওয়ামী লীগ হতে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এবং সেই সাথে তার মেয়র পদ বাতিলের জন্য আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তার এই অপসারনের পর থেকে দলীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় তার যেসকল ছবি এবং ছবি সংবলিত ব্যানার রয়েছে সেগুলো খুলে ফেলা হচ্ছে। খুলে ফেলা হচ্ছে তার সমর্থিত নেতাকর্মীদের সাথে মেয়রের ছবি থাকা সকল ধরনের প্রচারনার ব্যানার-ফেস্টুন।
গত রোববার রাতের দিকে নগরীর ৩১ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের যে সকল ছবি রয়েছে সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এর আগে নগরীর আজিমুদ্দিন কলেজে তার ছবি নামিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। মেয়র ঐ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে ছিলেন।
তবে কে বা কারা তার কার্যালয় থেকে জাহাঙ্গীর আলমের ছবি ভা’/ঙ’চুর করেছে তা জানেন না ৩১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম তিতুমীর। তিনি বলেন, মেয়র দলের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে অফিসে ছবি টাঙিয়েছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূ’ক্তি ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এরপর দল ও সরকারে তাঁকে মেয়র পদ থেকে অপসারণের উপায় খোঁজা হচ্ছে। তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করেননি।
এ অবস্থায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র পদে নির্বাচিত হতে অনেক কাউন্সিলর দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে প্যানেল মেয়রের জন্য এরই মধ্যে অনেকে প্রচারে নেমেছেন। ব্যানার-ফেস্টুন টানাচ্ছেন। সমর্থন আদায়ের জন্য তাঁরা মোবাইল ফোনে অন্য কাউন্সিলরদের থেকে সমর্থন ও দোয়া চাচ্ছেন। কেউ কেউ সশরীরে বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-সংসদ সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, দেখা যাক। আগে প্যানেল মেয়র নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হোক। আরেক কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডলও একই কথা বলেন।
জাহাঙ্গীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দু-এক দিনের মধ্যে
দল থেকে বহিষ্কার হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে এবার মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দিতে আইনি পর্যালোচনা শরু হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে কিনা সে বিষয়ে দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। গতকাল (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এ তথ্য জানান।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি কোন আইনে পড়ছেন সেটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং তারপর বলা যাবে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ‘পর্যালোচনা করার জন্য কত সময় লাগবে এমন প্র্শ্ন করা হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন,’ খুব বেশি নয়, দু-একদিন সময় লেগে যেতে পারে।’