বিএনপি সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নততর চিকিৎসা প্রদানের জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরা এবং দলের নেতারা। তাকে বিদেশে নিতে সরকারের নিকট হতে অনুমতি নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তারপরও ব্যর্থতাই থেকে যাচ্ছেন। অবশেষে গতকাল সোমবার হতে সমগ্র দেশে আ’ন্দো/লন শুরু করেছে দলটি। তবে এতে করে কোনো ভালো ফলাফল আসবে কিনা সেটা সংশয় রয়েছে দলের নেতাদের মাঝে। তাই বাইরে আন্দোলন শুরু করলেও তারা সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে। কারন তাদের আ’ন্দো/লনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। খবর বিবিসির।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারা চাইছেন বেগম জিয়াকে মানবিক বিবেচনার মাধ্যমে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। বিএনপি বর্তমান সময়ে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমেছে এবং তা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন অব্যাহত রেখে চলেছে বিএনপি। ঢাকার বাইরে বেশ কিছু জায়গায় অবস্থান নিয়ে আ’ন্দো/লন এবং সমাবেশ করার সময় বিএনপির সঙ্গে পু’/লি’শের সং’ঘ/র্ষ সংঘটিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এখন বিএনপির নেতারা রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে দেনদরবার করার পাশাপাশি সকল ধরনের প্রচেষ্টা চালানোর কথা বলছেন।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে তার ভাইয়ের আবেদনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিতভাবে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রীও বক্তব্য দিয়েছেন যে, আইনে এই অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে ৭৬ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে মুক্ত রয়েছেন। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এ ধরনের বক্তব্যের মুখে বিএনপি এখন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমেছে।
শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপর কতটা চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে, সেই প্রশ্নে দলটির ভেতরে সন্দেহ রয়েছে। দলটির নেতারা পরিস্থিতিটাকে তাদের দলের জন্য একটা সংকট হিসেবে দেখছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, এই ইস্যুতে সরকারকে নমনীয় করতে কর্মসূচি অব্যাহত রাখা এবং পরিবারের আবেদন নিয়ে এগোনোসহ সব চেষ্টা তারা চালাবেন। মানুষের জীবনের সংকটের চেয়ে বড় সংকট আর কী হতে পারে, আমরা সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য তার পরিবারের আবেদন রয়েছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে চেষ্টা করছি। অন্যান্য রাস্তা যা আছে, আমরা সবদিক থেকেই চেষ্টা করছি।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মা’মলায় সা’/জা থাকায় তিনি তার মায়ের এমন অসুস্থতার সময়ও দেশে আসতে পারছেন না। এ ব্যাপারে দলটি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না এবং এটিও তাদের সং’কট বাড়িয়েছে।
তবে বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, বিএনপির দুর্বলতার কারণে দলটি এমন পরিস্থিতিতে এসে ঠেকেছে।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে একজন প্রবীন নেতা বলেছেন, বর্তমান সময়ে দলের যে পরিস্থিতি সেখানে নেতৃত্ব বিষয়ে খালেদা জিয়ার পরিবারের অনুরোধের ভিত্তিতে একটি সমাধান চাইছেন। তবে পরিবারের পক্ষ হতে তাদেরকে বলা হয়েছে, সরকারকে আরও নমনীয় করার দায়িত্ব এখন দলকেই নিতে হবে এবং সে বিষয়ে পরিকল্পনার মাধ্যমে ফলপ্রসু কাজ করতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার পাশাপাশি সংসদে থাকা বিএনপির সাত সদস্য প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন- এই চিন্তা এখন দলের নেতৃত্বে।
রুমিন ফারহানা যিনি বিএনপির একজন সক্রিয় নেত্রী এবং সংসদ সদস্য তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে তার উন্নত চিকিৎসার দরকার কিন্তু সরকার সে সুযোগ দিচ্ছে না এর ফলে যদি খারাপ অবস্থা হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সরকার তার দায় এড়াতে পারবে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেছেন, সরকার মানবিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ হতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবে এখনও তারা সেটাই চাইছে।