Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিএনপি-জামায়াত জোট ভাঙার পরিকল্পনা আ.লীগের, ফাঁস করে দিলেন রনি

বিএনপি-জামায়াত জোট ভাঙার পরিকল্পনা আ.লীগের, ফাঁস করে দিলেন রনি

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একটি দল একবার ক্ষমতায় আসলে পরের বার অন্য দল ক্ষমতায় আসে। এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে প্রথম সিদ্ধান্ত নেয় যে, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে থাকায় তাদের ভোট সবসময়ই বিএনপিকে ক্ষমতায় এনেছে। এ জন্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে বিএনপি থেকে দূরে রাখার টার্গেট নেয়। অথবা বিএনপি জামায়াতের যে জোট সেটিকে ভাঙা।

সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।

তিনি বলেন, প্রথমে তারা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। জামায়াত নেতৃত্ব পরিবর্তন করে বিকল্প নেতৃত্বের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলেও সেখানেও ব্যর্থ হয়। জামায়াত ভাঙতে আওয়ামী লীগও বিকল্প শক্তি ব্যবহার করেছে, কিন্তু তাও ব্যর্থ হয়েছে।

পরে আওয়ামী লীগ বিদেশীদের দিয়ে চেষ্টা করে। এরই অংশ হিসেবে দিল্লির বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জামায়াত বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু খুব একটা সুবিধা পায়নি দিল্লি।

সাবেক সংসদ সদস্য রনি বলেন, ২০১১ ও ২০১২-এর দিকে যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার চলছিল, তখন ‘র’-এর একটি শক্তিশালী গ্রুপ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও কলকাতায় জামায়াত নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম ছেলেদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে; কিন্তু কোনো দৃশ্যমান ফল পায়নি। ফলে ওই বছর জামায়াতকে অনেক ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে পড়তে হয়। পরে আবার মীর কাশেম আলীর ফাঁসির রায়ের পর জামায়াতের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় যে বৈঠক, সেটিও ব্যর্থ হয়।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে জামায়াত বিএনপির যে বিভক্তি সেটিতেও ‘র’-এর হাত ছিল। বর্তমানে ভারতের বহিঃগোয়েন্দা সংস্থা বুঝতে পেরেছে যে, যেভাবে তারা বিশেষ গ্রুপ বা বিশেষ গোষ্ঠীকে মদত দিচ্ছে তাদের অনাগত দিনের রাজনীতিতে তাদের খুব একটা ভবিষ্যৎ নেই। এতে ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও কূটনৈতিক স্বার্থ সবকিছুই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

কারণ ভারত খুব ভালো করেই জানে যে মানুষ যখন কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতি বিরক্ত হয়, যখন সেই গোষ্ঠীটি জনগণের দ্বারা অভিশাপিত হয় এবং লোকেরা সেই গোষ্ঠীকে সাহায্য করে না। এটা করতে ব্যর্থ হলে দেশে বিদেশে তাদের যত দল আছে সব ধ্বং’স হয়ে যাবে।

সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখনও তাদের উপস্থিতি রয়েছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব হারিয়ে ভারত এখন সব মেধা বাংলাদেশে মনোনিবেশ করেছে। অতীতে যাদের ওপর ভরসা রেখেছিল তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রেখে। বিকল্প হিসেবে জামায়াতকে টার্গেট করেছে। কোনো কারণে যদি আওয়ামী লীগ ফেইল করে, তা হলে জামায়াতের ওপর আস্থা রাখবে। প্রয়োজনে ইরানের মতো ইসলামিক রেভ্যুলেশন করবে। তাও ভারতের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ হবে।

পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ এবং নেপাল – ভারত যে সমস্ত মিশনের জন্য যাচ্ছিল তা শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নতুন করে সাজাতে চায় ভারত। কারণ বাংলাদেশ ছাড়া তাদের আর কোনো জায়গা নেই। বাংলাদেশে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থে জামায়াতকে বিকল্প ট্রাস্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে ভারত।

রনি বলেন, পাকিস্তানে যেভাবে ইমরানের জোয়ার উঠেছে, তা ভারতের জন্য ইতিবাচক দিক নয়। পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলো শুধু ভারতের শত্রু নয়, তারা এখন আতঙ্কের নাম। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখনও তাদের (ভারতের) অবস্থান বজায় রাখা খুবই জরুরি। বাংলাদেশ এমন একটি ভৌগোলিকভাবে অবস্থানে আছে, যা ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *