‘আমি ভোট আড়ালে দিব না, টেবিলের উপরই নৌকায় সিল দিব, যারা মেম্বর তাদের ভোট গোপনে দেব। প্রশাসনের কেউ এখানে কোনো কিছু করার রাখে না। যারা প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও পু’লি/শ তাদের কোনো কিছু করবার নেই। আমি আমার ভোট দেব, ওপেনলি দিব, টেবিলের উপরে ব্যালট রেখেই দিব। দু-দশজন লোক এই পথে বাধা দিতে পারে। আমি খালেক সেটা দেখবো, দেখি কী করতে পারে তারা।’
গতকাল (শুক্রবার) রাতে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলাধীন ষোলটাকা ইউনিয়নাধীন বানিয়াপুকুর নামক গ্রামে এম এ খালেক যিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেলবর হোসেনের নির্বাচনী জনসভায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে এমনভাবেই কথা বলেন।
এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার এই ধরনের বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়নে সহিংসতার আ’শ’/ঙ্কা করছেন অন্য প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগ নেতা এম এ খালেক আরো বলেন, ‘একবারের জায়গায় দুইবার, দুইবারের জায়গায় তিনবার ভোট দেবেন, ভোট দিয়ে দেবেন। ভোট দিতে গিয়ে কেউ আপনাকে ঠেলা দিলে, আপনিও ঠেলা দেবেন। তবে খু’/ন’খা’/রাবির মধ্যে যাবেন না। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষু’ণ্ন হবে।’
খালেকের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ষোলটাকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আনোয়ার পাশা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকার ও নির্বাচনকে প্রশ্নবি’দ্ধ করতে এমন বক্তব্য দিয়েছেন এম এ খালেক। একবারের জায়গায় দুইবার, তিনবার ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে এলাকায় স’হিং’/সতার জন্য জনগণকে উ’/সকে দিয়েছেন তিনি।’
ভোটকেন্দ্র দ’খ’/ল ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও পু’/লি’শের কিছুই করার নেই—এমন মন্তব্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘খালেকের এ বক্তব্যে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষু’ণ্ন হয়েছে। এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সংশ’য় দেখা দিয়েছে।’
ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও ক্লিপের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক বলেন, ‘পুরো বক্তব্য থেকে কেটে কেটে এডিট করে আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। একটি কথার সঙ্গে আরেকটি কথার যৌক্তিকতা রয়েছে।’
মেহেরপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু আনছার বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে থেকে কাম্য নয়। অবশ্যই এটি আচরণবিধিবহির্ভূত। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন মো. দেলবার হোসেন (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান (মোটরসাইকেল), আনোয়ার পাশা (আনারস) ও জান মোহাম্মদ (লাঙল)।
মেয়রের হু/ম’কি, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না’ : এদিকে রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, ‘স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আহম্মেদ আলী মাস্টার আওয়ামী লীগের লোক, তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহারের কথা বলে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাঁর কোনো এজেন্ট দিতে দেওয়া হবে না। নৌকার সঙ্গে যারা মীরজাফরগিরি করেছে—কার সঙ্গে ল’ড়/তে এসেছে মাস্টার, এবার আমরা দেখাব।’
গত রবিবার রাতের দিকে আব্দুল হান্নান মোল্লা যিনি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির ইসলামপুর ইউনিয়ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার জন্য আসেন। নজরুল ইসলাম মন্ডল এভাবেই যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তিনি হু’ম’/কি দেন। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বর ঐ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।
আহমেদ আলী মাস্টার যিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি বলেন, মেয়র নজরুল নির্বাচনী আচরণবিধি ল’/ঙ্ঘন করে আমাকে এলাকায় ঢুকতে দেবেন না বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন। এসময় নৌকার প্রার্থীসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এলাকার ভোটার যারা রয়েছেন তাদের মাঝে এ বিষয় নিয়ে আ’/ত’ঙ্ক বিরাজ করছে।
আবদুল হান্নান মোল্লা যিনি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, তিনি আসলে এই এলাকায় বেড়াতে এসেছেন। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা দেওয়া ঠিক হয়নি। নিজাম উদ্দিন আহমেদ যিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।