কক্সবাজার-টেকনাফের সেন্টমার্টিনে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হওয়া বিসিএস ক্যাডার হ্যাপি (৩১)কে উদ্ধার করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ। তিনি ৪১তম বিসিএস ক্যাডার। তাকে বনবিভাগে পদায়ন করেছিলো সরকার।
শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে আসা সঙ্গীরা তাকে খুঁজে পায়নি। সেন্টমার্টিন ভ্রমন করতে গিয়ে গত রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে তার সন্ধান মিলছে না মর্মে তার সাথে বেড়াতে আসা সহপাটিরা পুলিশকে অবিহিত করার পাশাপাশি তারা থানায় একটি লিখিত ডায়রি করে। এরপর কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ও উখিয়া-টেকনাফ সার্কেল স্যারের সার্বিক নির্দেশনা মোতাবেক থানায় কর্মরত এসআই সু-দর্শনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকষ দল তাকে উদ্ধার করার জন্য অভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে।
সেই সূত্র ধরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় ট্রেকিং করতে গিয়ে নিখোঁজ নারী বিসিএস ক্যাডারের মোবাইল লোকেশন পাওয়া যায়।
দীর্ঘ ৫দিনের অভিযানের ফলে শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে কক্সবাজার সু-গান্ধা বিচ পয়েন্টের কাছে এআর গেস্ট হাউস নামক একটি হোটেলের কক্ষ থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। .
ওসি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া নিখোঁজ নারী বিসিএস ক্যাডার হ্যাপিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে এবং বিসিএসের ফলাফল সন্তোষজনক না হওয়ায় জীবন আড়াল করতে তিনি এ পথ নিয়েছেন। তিনি এখন পুলিশের অভিযানকারী দলের হেফাজতে রয়েছেন। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান ওসি।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আদনান চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি জানার পর টেকনাফ থানা পুলিশ নিখোঁজ নারীকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
অভিযানকারী দলের পুলিশ সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তথ্য প্রযুক্তি মোবাইল ট্রেকিং এর সহায়তায় ৫ দিন পর কক্সবাজার বিচ পয়েন্ট এলাকার একটি হোটেল থেকে এই নারী বিসিএস ক্যাডারকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য:-নিখোঁজ নারীসহ ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ৭১ জনের একটি টিম প্রবালদ্বীপ খ্যত সেন্টমার্টিনে ভ্রমনে যায় তারা দ্বীপে অবস্থানরত হোটেল সি ভিউসহ বেশ কয়েকটি রিসোর্টে উঠেন।
পরে (রবিবার) সকালে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলে রিসোর্ট থেকে বের হন। বিকেল পর্যন্ত হোটেলে না ফেরায় তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তারপর ফোন রিসিভ করে বলল যে সে এক বন্ধুর সাথে আছে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ওই দিন তার রুমমেটরা পুলিশকে জানায়, ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে সেন্টমার্টিনের একটি হোটেলের কক্ষে মাহমুদা আক্তার হ্যাপি ও তিন বান্ধবী একসঙ্গে ছিলেন। সেদিন রাতে হ্যাপি প্রথমে ঘুমিয়ে পড়লেও বাকি দুই বান্ধবী দেরি করে ঘুমিয়ে পড়ে। আর ওই দুই বান্ধবী সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন হ্যাপি রুমে নেই।তার কাপড় চোপড় ও ব্যাগ গোছানো। পরে সাড়ে ৯টার দিকে এক বান্ধবীর ফোনে হ্যাপীর নাম্বার থেকে একটি ম্যাসেজ আসে, “আমি গোসল করে রুমে ফিরব। এরপর থেকেই হ্যাপীর আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।