ভরণপোষণ না দেওয়ায় লোকজন দিয়ে মোহন নামে এক ঠিকাদারকে ধাওয়া করে শীতের মধ্যরাতে কচুক্ষেতের পানিতে নামিয়ে এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী।বন্ধু পাওনা টাকা দিতে না পারায় এই নারীকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
মোহন জরুরি পরিষেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়। শনিবার ভোর ১টা থেকে ২টার মধ্যে ফতুল্লার সাইনবোর্ড তুষারধারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন জানান, মোহন তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তুষারধারা এলাকায় থাকেন এবং ঠিকাদারের কাজ করেন। আরেকজন বন্ধু ছিল যে তার বাড়ির কাছে একটি ফ্ল্যাট কিনে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। সেই বন্ধুর কাছে মোহনের মোটা অঙ্কের টাকা পাওনা ছিল। আর সেই টাকা দিতে না পারায় বন্ধু তার স্ত্রী সাথী আক্তার ও শিশুটিকে তার ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রাখে। এরপর মোহন তার পাওনা টাকার জন্য সাথী আক্তারকে চাপ দেয়।
দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মোহন ও সাথী আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সাথী আক্তার তার আগের স্বামীর কেনা ফ্ল্যাটে থাকেন। মোহন ওই ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করলেও সাথীকে ভরণ-পোষণ দিতেন না। এ নিয়ে মোহন ও সাথীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হয়।
এ প্রসঙ্গে মোহন বলেন, সাথীকে প্রথমে মৌখিকভাবে বিয়ে করি। পরে ৫ লাখ টাকা কাবিন দিয়ে কাজির মাধ্যমে বিয়ে করি। বিয়ের পর থেকে নিয়মিত ভরণপোষণ দিয়ে আসছি। কয়েক দিন আগেও চালের বস্তা কিনে দিয়েছি। বাজারও করে দিয়েছি। কিন্তু সাথী আমাকে ঘরে থাকতে দেয় না। তার কারণ, সাথীর সঙ্গে একাধিক পুরুষের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণও আমার কাছে আছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলেই সাথী আমাকে মারধর করতে চায়, ঘর থেকে বের করে দেয়।
তিনি জানান, রাত ১২টার দিকে সাথীর ফ্ল্যাটে গিয়ে দরজায় ধাক্কা দিলে কেউ শব্দ করেনি। কিন্তু বাড়িতে লোকজন আছে এমন শব্দ শুনতে পাই। দরজায় জোরে ধাক্কা দিলে সাথী গালিগালাজ করে চলে যেতে বলে। আমি যাব না বললে সাথী তার তিনজন লোক হাতে রড ও লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করার জন্য পাঠায়। তখন দৌড় দিলে তারা পিছু নেয় এবং মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে জীবন বাঁচানোর জন্য সড়কের পাশে কচুক্ষেতের ভেতর ঢুকে পড়ি। ওই ক্ষেতে বুক সমান অনেক ঠান্ডা পানি ছিল। ওই সময় ডাকাডাকি করেও কাউকে পাইনি। তারা আমাকে পানিতে এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। তখন প্রথম স্ত্রীকে ফোন করে তার সহযোগিতা চাই। এর পর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যায়।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মোহনকে ভেজা অবস্থায় কচুক্ষেতের সামনে পেয়েছি। তাকে চিকিৎসা দিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছি।