নীতিমালা লঙ্ঘন করে সুদ দিয়ে এবার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। তারল্য সহায়তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তারা এখনও পুরো অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি।
গত ২৬ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংকের ৮৫১তম বোর্ড সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক ১০ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়েছে। ‘কল অ্যান্ড শর্ট নোটিশ ডিপোজিট’ নামের তারল্য সহায়তার আওতায় এ অর্থ অনুমোদন দেয়া হয়। পরের দিনই সেটা বুঝে পায় তারা।
ঋণ পরিশোধের সময়কাল ছিল ১৪ দিন। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক এখনো পুরো টাকা পরিশোধ করেনি। বিষয়টি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলছেন, এই অর্থের মধ্যে সোনালী ব্যাংক তাদের অভ্যন্তরীণ ঋণসীমা ছাড়িয়ে ৬২১ কোটি টাকা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শরীয়াহ-ভিত্তিক ব্যাংকিং নীতি অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক সুদ নিতে বা দিতে পারে না। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মাজবাউল হক বলেন, দুই ব্যাংকের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিষয়টি জানার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।
সভার কার্যবিবরণীতে সোনালী ব্যাংক জানায়, ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট রেটিং এবং টলারেবল ক্লাসিফায়েড লোন রেটিং সন্তোষজনক ছিল। ব্যাংকটির সার্বিক আর্থিক অবস্থা নিয়েও অসন্তোষের কিছু ছিল না। তাই কাউন্টারপার্টি ক্রেডিট লিমিটের (আন্তঃব্যাংকিং লেনদেনে ব্যাংকের ঋণ সীমা) বাইরে গিয়ে এ ঋণ দেয়া হয়।
সোনালী ব্যাংক আরও বলেছে, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটি সাময়িক তারল্য সংকটের সম্মুখীন। এজন্য তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়। দেশের সার্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্বার্থে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশের ৬১টি তফসিলি ঋণদাতার মধ্যে ইসলামী ব্যাংক হচ্ছে সবচেয়ে বড় আমানত গ্রহণ ও ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেটাই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতি। বিভিন্ন ক্লিয়ারিং পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে চলতি হিসাব রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান অ্যাকাউন্টে ৩৬৪৭ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে।