Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আয়ানের মৃত্যু নিয়ে রিপোর্ট লোক দেখানো ও হাস্যকর: হাইকোর্ট

আয়ানের মৃত্যু নিয়ে রিপোর্ট লোক দেখানো ও হাস্যকর: হাইকোর্ট

বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খৎনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনকে লোক দেখানো (আইওয়াশ) ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, দায় এড়াতে তারা (স্বাস্থ্য বিভাগ) এ ধরনের প্রতিবেদন দিয়েছে। শিশু আয়ানের হাঁপানির সমস্যা জানার পরও কেন অপারেশনের জন্য এত তাড়াহুড়া করলেন চিকিৎসকরা?

শিশু আয়ানের খতনার সময় যে পরিমাণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়, হার্ট বাইপাসের জন্য এত ওষুধের প্রয়োজন হয় না বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।

আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

আদালতে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

এর আগে রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আতাবুল্লাহ হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, তদন্ত কমিটি বলেছে, ৫ বছর ৮ মাস বয়সী আয়ানের ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা (হাঁপানি) ছিল। এই বয়সে অটো পিক বা অ্যালার্জিক অ্যাজমা হয়ে থাকে। ব্রঙ্কিায়াল অ্যাজমা অ্যালার্জেন (অতি সংবেদনশীলকারক) দিয়ে হয়।

অস্ত্রোপচারের আগে আয়ানকে অ্যানেস্থেসিয়া বা সংবেদনহীন করতে প্রয়োগ করা ইনজেকশন প্রোফোফল মারাত্মক অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া (অ্যানাফিল্যাকটয়েড রিয়্যাকশন) সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে শ্বাসনালী সংকুচিত হতে পারে (ল্যারিঙ্গোস্পাজম) বা শ্বাসনালীর চারপাশের পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং খিঁচুনি হতে পারে (ব্রঙ্কোস্পাজম)। যা অ্যানেস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালিত হয়।

চার নম্বর মতামতে বলা হয়েছে, সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) ও ওষুধ (মেডিকেশন) দিয়ে আয়ানের হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনতে ১০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল। যার কারণে হাইপক্সিক ব্রেন ইনজুরি (মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহ বন্ধ হয়ে মৃত্যু) হয়ে আয়ানের মৃত্যু হতে পারে। তখন সিটি স্ক্যান বা ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম-ইসিজি করলে হাইপক্সিক ব্রেন ইনজুরি হয়েছিল কি না, তা জানা যেত। তাছাড়া সিপিআরের কারণে (রিব ফ্র্যাকচার) পাঁজরের হাড়ও ভেঙে যেতে পারে বলেও মতামতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, সিপিআর একটি জীবনদায়ী পদ্ধতি। মানুষের হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে দুই হাতে বুকে চাপ দিয়ে শরীরে রক্ত ও অক্সিজেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়ান ‌চাইল্ডহুড অ্যাজমা সমস্যায় ভুগছিল। শ্বাসকষ্টের জন্য আয়ানকে মাঝে মাঝে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া লাগতো। সুন্নতে খৎনার অপারেশনের আগে ওয়েটিং রুমে তাকে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হয়নি।

প্রতিবেদনের মতামত বিভাগে আরও বলা হয়েছে, অপারেশনের সময় শিশু আয়ানের স্বাভাবিক রক্তপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

About Rasel Khalifa

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *