সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশের বাইরে নেয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এদিকে আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) চিকিৎসাধীন বেগম জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন,বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘এখনো সিরিয়াস’।
তিনি বলেছেন, সিসিইউতে থাকার কারণে আমরা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। ওনার অবস্থা এখনো সিরিয়াস। কিন্তু গত ৪৮ ঘণ্টায় একটু উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো পুরোপুরি সেইফ না।
এদিন বেলা ১১টায় গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরকে নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান ড. রেজা।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পথে তিনি আরও বলেন, আমরা বেগম জিয়ার চিকিৎসক ডা. জাহিদের সঙ্গে আলাপ করেছি। বিস্তারিত আলাপ করার পর উনি আমাদের জানিয়েছেন, কী কী কারণে বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া দরকার। কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা আছে, যেগুলো সিঙ্গাপুরেও নেই। এসব চিকিৎসা আমেরিকায় সব থেকে বেশি ভালো হয়। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা বুঝেছি, বেগম জিয়াকে আমেরিকায় নেওয়া দরকার। উনার যে রোগগুলো এখন দেখা দিয়েছে সেগুলোর জন্য আমেরিকায় চিকিৎসা নেওয়া সব থেকে বেশি জরুরি। আমি আশা করি প্রধানমন্ত্রী ও ক্যাবিনেট বেগম জিয়ার চিকিৎসার এ বিষয়টা দেখবেন। অন্তত মানবিক কারণে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেবেন, এটা দেশের জন্যও ভালো হবে।
এসময় নুরুল হক নুর বলেন, আমরা বেগম জিয়ার চিকিৎসক টিমের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় কথা বলেছি। চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, বেগম জিয়া কারাগারে থাকার সময় তার চিকিৎসার অনিয়ম হয়েছে। সেখানে ডাক্তার ও মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন যে ফলোআপ করার কথা ছিলো, সেটা করেনি। এ কারণে তার শারীরিক জটিলতা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
নুর বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির (অন্তর্বর্তীকালীন) পরে পোস্ট কোভিট জটিলতায় এখন খুবই খারাপ অবস্থায় আছেন। পূর্বের জটিলতা আর বর্তমান অবস্থা মিলিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়া খুবই প্রয়োজন, এটা বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডই বলেছে। রাজনীতির বাইরে গিয়েও আমরা একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের স্ত্রী হিসেবেও উনার প্রতি এই মানবিকতা দেখাতে পারি। সরকার ও সরকারি দলের প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে আহ্বান থাকবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে যেন একটা মানুষকে আমরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না করি।
বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আপনারা কোনো কর্মসূচি দিচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রেজা ও নুর বলেন, বিএনপি তাদের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। এমন কোনো পরিকল্পনা থাকলে আপনাদের জানাবো। রাজনৈতিক দল হিসেবে যে ধরনের কর্মসূচি বা সংহতি জানানো দরকার, সে প্রচেষ্টা সব সময় থাকবে।
গত বেশকিছু দিন ধরে হার্ট, কিডনিসহ কয়েকটি শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর আগে গত ১২ অক্টোবর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির দীর্ঘ ২৬ দিন পর ৭ নভেম্বর নিজ বাসায় ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে।