আমি বোঝাতে পারবো না, একজন মায়ের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব কিনা। আল্লাহ যেন আর কারো ভাগ্যে সন্তান অপহরণের এরকম ঘটনা না দেয়। যারা আমার ছেলেকে অপহরণ, নির্যাতন করেছে তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।
একমাত্র ছেলে হাসিবুর রহমান ওরফে হিমেলকে ফিরে পেয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই অনুভূতি ব্যক্ত করেন মা তহুরা বিনতে হক। হিমেল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
তিনি আরও বলেন, আমি নিশ্চিত নই আমার ছেলে কি করবে? ছেলেটা এখনো অসুস্থ। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমি বলতে পারি না, আমি শুধু মনে করি তাদের পৃথিবীতে না রাখাই ভাল। 24 ঘন্টা গালাগালি এবং হুমকি. এখনও ভয় পায়। তিনি আমাকে প্রশাসনের কাছে না যাওয়ার হুমকি দিতেন। বলেছে ছেলেকে মেরে ফেলবে। সঙ্গে ছিল এক চাকমা ছেলে। বারবার তাকে জবাই করার হুমকি দেয়। ছেলের সঙ্গে ছিলেন চালক। আমি প্রথম থেকেই তাকে সন্দেহ করতাম। চালক সামিদুল ফোনে ভদ্রভাবে কথা বলেন। বলতেন ম্যাডাম টাকা নিয়ে এসেছেন। আমি এসে নিয়ে যাব। কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না।
এখন কি বুঝতে পারছেন চালক হিমেল অপহরণ মামলায় জড়িত- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তহুরা বলেন, আগে কখনো চালক সামিদুলকে সন্দেহ করিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার দিন সামিদুল ব্যবসার কথা বলে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। তবে অপহরণের গত ১০-১২ দিনেও সামিদুলের মেজাজ ভালো ছিল না। শুধু আমার ছেলের সাথে বাইরে যেতে চেয়েছিল। বাইরে যেতাম, টাকা দিতাম, টাকা খরচ করে দেখতাম। কিন্তু ছেলেটি তাকে কখনো সন্দেহ করেনি।
র্যাবকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সন্তান যেভাবে মাকে নিয়ে যায় আমরাও আপনাকে সেভাবে নিয়ে যাব, ছেলেকে উদ্ধার করব’- এভাবেই বলেছে র্যাব। শেষ পর্যন্ত আমি টাকা নিয়েই ঝুঁকি নিয়ে বের হই। একজন মা এসব সহ্য করতে পারে কিনা জানি না। আল্লাহ যেন কারো ভাগ্যে এরকম কিছু না রাখে।
এর আগে প্রায় এক মাস আগে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসিবুর রহমান হিমেলকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর তাকে ভারতের মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি শুরু করে।
সম্পাদনাঃ সমর চক্রবর্তী