চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সার্ভেয়ার সুনীল কান্তি দেব মহাজন ও তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবের সম্পদের তথ্য গোপনের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সার্ভেয়ারের স্ত্রী একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের মালিক বলে দাবি করেছেন। আসলে ওই মহিলা একজন গৃহিণী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে এ চিত্র উঠে এসেছে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. খায়রুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জেলা সমন্বয় কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম।
আসামিরা হলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পূর্ব চাম্বল গ্রামের জয়ন্ত কুমার দেব মহাজনের ছেলে ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সার্ভেয়ার সুনীল কান্তি দেব মহাজন (৫৯)। তার স্ত্রীর নাম স্মৃতি রানী দেব (৫৫)। দুইজন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার জামাল খান হেমসেন লেইনের আনোয়ার মঞ্জিলে বসবাস করছেন।
তাদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা সম্পদ বিবরণীতে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এই ঘটনায়, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা সহ দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) এবং ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি সুনীল কান্তি দেব মহাজন ও তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবের বিরুদ্ধে সম্পদের বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে দুদক। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে তারা দুদক কার্যালয়ে সম্পদের বিবরণী পূরণ করে জমা দেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকার সম্পদের তথ্য মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়। যা দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেব ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত আয়কর দিয়ে আসছেন বলেও জানা গেছে। তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে নিজের নামে ৬৭ লাখ ৮৭ হাজার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য জানান। ২০১১ সালের ৬ এপ্রিল স্মৃতি রানী দেব কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় একটি ২তলা ভবনের উপরে একটি একতলা টিনশিট আধাপাচা কেনেন। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করলেও দুদক তার গৃহবধূ হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে।
তার যাবতীয় খরচসহ মোট অর্জিত মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৮২১ টাকা। এই সম্পদের বিপরীতে তার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় ৫২ লাখ ২২ হাজার ৫২ টাকা। এ ক্ষেত্রে তার সম্পদের তুলনায় আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকা পাওয়া গেছে।