নির্বাচকরা জানিয়েছেন, মুশফিকুর রহিমকে বাংলাদেশে টি-২০ ম্যাচ খেলতে আসা পাকিস্তানের বিপক্ষে যে সিরিজ অনুষ্ঠিত হতে যচ্ছে সেখানে তাকে রাখা হয়নি, কারন টেস্টের জন্য বিবেচনা করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্বকাপের পর নাকি কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন। গতকাল মিরপুরে অনুশীলন করার পর মুশফিকুর রহিম স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন যে, এই কথা শোনা গেলেও তার কিছুই নয়, তাকে স্রেফ বাদ দেওয়া হয়েছে। দেশের একটি জনপ্রিয় পত্রিকার ক্রীড়া সম্পাদক সাইদুজ্জামান এমন ধরনের তথ্য তুলে এনেছেন জাতীয় দলের জ্যেষ্ঠতম ক্রিকেটারের মনের ছাইচাপা আগুন।
প্রশ্ন: পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আপনার অনুপস্থিতির বিষয়টাকে কীভাবে নিচ্ছেন? নির্বাচক যারা রয়েছেন তাদের যে ব্যাখ্যা সেটা নিশ্চয়ই শুনেছেন।
মুশফিকুর রহিম: ক্রিকেটার হিসেবে যখন ক্যারিয়ার শুরু করেছি সেখানে ক্যারিয়ারে তো উত্থান-পতন থাকবেই। আর এই ধরনের ঘটনা প্রথম নয়। তবে হ্যাঁ, অনেক দিন পরে আমি বাদ পড়েছি। এটা আমার উপর তেমন প্রভাব ফেলেনি, স্বাভাবিক মনে হয়েছে বিষয়টি। বিশ্বকাপে আমার যে প্রত্যাশা ছিল, সেই আশাটা পূরণ হয়নি। এই কারণে যদি আমকে এই ম্যাচগুলো থেকে বাদ দেওয়া হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে আমি একজন ক্রিকেটার হিসেবে ভালোভাবেই নিচ্ছি। দিনের শেষে, আমি এটা বিশ্বাস করি যে আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করে থাকেন।
প্রশ্ন: শোনা গেছে, আপনি নিজে থেকেই নাকি বিশ্রামে যেতে চেয়েছিলেন?
মুশফিক: না, আমি এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি যেখানে কাউকে বিশ্রাম নেওয়ার বিষয়টি বলতে হবে। এই তিনটি টি-টোয়েন্টিতে যদি সুযোগ পেতাম, বিশ্বকাপে করা ভুলগুলো শুধরে আরও ভালো করার চেষ্টা করতাম। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ যে দুটি সিরিজ জিতেছে, সেইভাবে যেন আমরা গতি ফিরিয়ে আনতে পারি। দুর্ভাগ্যবশত তা ঘটেনি। তবে দলের সবার জন্য শুভকামনা রইলো।
প্রশ্ন : একটা বিশ্বকাপ দিয়ে কাউকে বিচার করা কতটা যৌক্তিক, বিশেষ করে ধারাবাহিকতার জন্য দীর্ঘদিন যাঁর প্রশংসা হয়েছে? আপনার কথা বলছি।
মুশফিক : বিশ্বকাপ অবশ্যই অনেক বড় ইভেন্ট। বড় ইভেন্টে কেউ ভালো করে, কেউ খারাপ করবে। ভারতের মতো দল সেমিফাইনাল খেলবে না, কেউ ভাবতেও পারেনি। সত্যি বলতে, নিজের প্রত্যাশা পূরণ না হলেও আমি যতগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি, এবারই সবচেয়ে ভালো খেলেছি। যেকোনো সময় অনেক ক্রিকেটার এসব কারণে বাদ পড়েন। আমি তাদের মধ্যে একজন। এই তো। সমস্যা নেই, আমার কাছে এটা নেতিবাচক মনে হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য যেভাবে চেষ্টা করেছি সব সময়, এখনো সেভাবেই করছি। একটা ব্যর্থতাই দুনিয়ার শেষ নয়। আমার কাছে মনে হয়, সামনে সুযোগ এলে আমি চেষ্টা করব।
প্রশ্ন : নির্বাচকরা বা টিম ম্যানেজমেন্ট কি বিষয়টি নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলেছে?
মুশফিক : নাহ, সেভাবে কথা হয়নি। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, এই সিরিজে আমি অ্যাভেইলেবল কি না। আমি বলেছি, ‘অবশ্যই’। দলে নেওয়া বা না-নেওয়া তো আমার হাতে নেই। তাঁরা মনে করেছেন, টি-টোয়েন্টি দলে আমার হয়তো ওরকম প্রয়োজন নেই। এটা ঠিক আছে। পরে নান্নু ভাই (প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন) বলেছেন যে, তাঁরা এই সিরিজে আমাকে বিশ্রাম দিচ্ছেন, কারণ সামনে অনেক খেলা আছে টেস্টে। তবে বাংলাদেশে এমন কোনো ক্রিকেটার সম্ভবত নেই যে বলতে পারে, পর পর চারটি টেস্ট খেলতে পারবেই। আমি তাই জানি না, কী যুক্তিতে (বিশ্রাম)। অবশ্যই যেকোনো ক্রিকেটারের জন্য প্রস্তুতি একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। হয়তো তাঁরা ওভাবেই চিন্তা করেছেন। গতবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যেহেতু দল অনেক খারাপ করেছে, এবার হয়তো তারা চ্যাম্পিয়ন হতে চায় বা এক-দুইয়ে থাকার জন্য ল’/ড়া’ই করতে চায়। হয়তো এ জন্য বাদ দিয়েছে।
প্রশ্ন : আপনি নিজে বারবার বলছেন আপনাকে ‘বাদ’ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু নির্বাচকরা বলেছেন, ‘বিশ্রাম’।
মুশফিক: আমি মনে করি সত্যিকারের সৎ এবং সত্য চিন্তাটা জনিয়ে দেওয়া উচিৎ। দলের আগে, দেশের আগে তো কেউ থাকা উচিৎ নয়। আমি সেখানকার নগণ্য সদস্যদের একজন। পারফরম্যান্সে উত্থান-পতন থাকবেই এবং একজন ক্রিকেটারকে তার পারফরম্যান্স এবং ফিটনেস দিয়ে বিচার করতে হবে। এটা পরিষ্কার করে বললে হতো যে ‘আমরা ভিন্নভাবে চিন্তা করছি, এই সিরিজে নয়, যদি তোমরা ভালো পারফর্ম করতে পারো’, যা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, তারা যদি আমাকে এতটা সম্মান করতেন তবে সেই বিষয়টি আমার কাছে ইতিবাচক একটি দিক হতো এবং ভালও লাগতো। যদি সত্যিই পরবর্তী চারটি টেস্ট ম্যাচ (পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে) নিয়ে ভাবেন, তাহলে বিশ্বকাপের আগেও বলতে পারতেন, ‘এই টেস্টগুলো সামনে আছে, আপনি টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে বিরতি নিতে পারেন’, তাহলে হয়তো এটা ারো বেশি ভালো হতো। আরও উপযুক্ত, মানসিকভাবে প্রস্তুত নিতে পারতাম। আমি নিজেও হয়তো বিশ্বকাপ থেকে ফিরে জাতীয় লিগে দু-একটা ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা করেছিলাম। আমাকে এত দেরিতে বলা হয়েছিল যে আমি সেরকম কোনো কিছু পাচ্ছি না।
একটু খোলামেলা কথা বললে ভালো হয়। তাঁরা যদি আমাকে বলতেন যে ‘আমরা এ রকম চিন্তা করছি’, তাহলে আরেকটু প্রস্তুতি নিতে পারতাম (টেস্টের জন্য)। কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো যে অ্যাভেইলেবল কি না, এরপর হুট করে (বিশ্রাম)। তখনো যদি তাঁরা বলতেন যে বাইরে রাখার চিন্তা করছেন, তাহলে অন্যভাবে পরিকল্পনা করতে পারতাম। কিন্তু সব কিছু শেষে হুট করেই বলা হলো, প্রস্তুতি নেওয়া এখন কঠিন।
প্রশ্ন : দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক বলেছেন এটা নতুন পথচলা। একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর এই মন্তব্যে বিশেষ কোনো বার্তা পাচ্ছেন?
মুশফিক : আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি। টেস্ট-ওয়ানডের তুলনায় টি-টোয়েন্টিতে আমি নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারিনি। মাঝেমধ্যে কয়েকটা ইনিংস বা সিরিজ হয়তো ভালো খেলেছি, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আরো অনেক ধারাবাহিক হওয়ার জায়গা আমার আছে। এটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।
আমি পারফরম করতে না পারলে অন্য কেউ আসবে, এটা স্বাভাবিক। যদি পারফরম্যান্সই কারণ হয় (বাইরে রাখার), তাহলে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। সামনে বিপিএল আছে, এরপর আরো খেলা আছে, আগামী বছর বিশ্বকাপ… আমি জোর দিয়েই চেষ্টা করব টি-টোয়েন্টি সেট আপে আবার ফিরতে। নির্বাচক-টিম ম্যানেজমেন্টের চিন্তা তো আমার কাছে কেউ কিছু বলেনি এখনো। আমার ভাবনায় থাকবে পারফরম্যান্স দিয়েই দলে ফেরা।
প্রশ্ন : নির্বাচকদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বললেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগেও যোগাযোগের ঘাটতির কারণে আপনি খেলতে পারেননি। অনেক সময়ই শোনা যায় যে, আপনাকে তাঁরা অনেক কিছু বলতে সংকোচ করেন!
মুশফিক : আমি কি খাঁচার বাঘ যে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে, এখন আমি তাঁদের বা অন্যদের খেয়ে ফেলব (হাসি)? আমার অভিষেক হয়েছে সুমন ভাইয়ের (নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার) অধিনায়কত্বে। এখন উনি যদি বলতে না পারেন ছোট ভাইকে কোনো কথা… শুধু উনি কেন, আকরাম ভাই, নান্নু ভাই, উনারা বিকেএসপিতে খেলতে গিয়েছিলেন, আমরা বল থ্রো করেছিলাম, তখন আমাদের জন্য স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ব্যাপার ছিল। এখন তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারছি। এখানে যদি ওনারা কথা বলতে না পারেন আমার সঙ্গে… আমি তো সব সময়ই ওয়েলকাম করি। কিছু ক্রিকেটার আছে, যাদের অন্যভাবে বলতে হয়। সেটা তো তাদের জানতে হবে। আমারও বুঝতে হবে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে নান্নু ভাই ফোন করে আমার বাবা-মায়ের খোঁজখবর নিয়েছেন। আমি বলেছিলাম যে উন্নতি হচ্ছে অবস্থার। এর কদিন পর আমি নিজেই নান্নু ভাইকে ফোন করে বলেছি যে, মা-বাবার অবস্থা ভালো এখন, আমি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি (অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য)। তার পরও ওনারা আমাকে কিছু বলতে না পারলে আমার দিক থেকে কিছু করার নেই। আমাকে ছাড়াই তো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জিতেছে। তাঁরা হয়তো ভেবেছেন যে আমাকে দলে হয়তো আর দরকারও নেই।
প্রশ্ন : কোচিং স্টাফের সঙ্গেও কি সেই যোগাযোগে ঘাটতি আছে? আপনি কতটা স্বচ্ছন্দ কোচিং স্টাফের সঙ্গে?
মুশফিক : আমার জন্য সত্যি বলতে একটু চ্যালেঞ্জিংই। আগেও অনেকবার নানা ঘটনা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, কমিউনিকেশন গ্যাপের সমস্যা আছে। জানি না, আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক! খোলামেলাভাবে সব কিছু বললে, আমার জন্য ভালো হয়, দলের জন্য ভালো হয়। সবার জন্যই ভালো। এমন তো নয় এটা আমার দল! এটা দল ও দেশের ব্যাপার। টেবিলে আলোচনায় বসলে কথা হবে, তর্ক-বিত’র্ক হবে যুক্তি দিয়ে। এটাই তো উচিত। একটা উদাহরণ দিই। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে চার নম্বরে আমার রেকর্ড দুর্দান্ত ছিল। হুট করে একদিন চন্দিকা হাতুরাসিংহে বললেন, ‘বিশ্বকাপে তোমাকে ছয় নম্বরে খেলতে হবে।’ আমি তখন মেনে নিতে পারিনি শুরুতে। বললাম, ‘তুমি আমার গত তিন-চার বছরের পারফরম্যান্স জানো চার নম্বরে?’ তিনি বললেন, সব জানেন। তিনি তখন আমাকে খুব ভালোভাবে সব বুঝিয়ে বললেন যে কেন ছয়ে আমাকে দরকার। যুক্তি, তর্ক-বিত’র্ক হয়েছে। এরপর আমরা একমত হয়েছি। নিজেই পরে বলেছি, ‘এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত। দলের জন্য খুশি মনেই করব।’ আমি খেললাম ছয়ে। ভালো খেললাম। চারে রিয়াদ ভাই খেললেন, ভালো করলেন। দলের লাভ হলো। এভাবেই তো হওয়া উচিত আলোচনা। এখন কেউ যদি বলে, ‘আমি একটা সিদ্ধান্ত নিলাম, দলের দরকার।’ আর কিছু নেই। ওই ক্রিকেটার কিছু জানে না, কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড জানা নেই, কারণ জানে না, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানে না, তাহলে তো তা অন্য রকম হয়ে গেল। এসব আরেকটু পরিষ্কার করে বলা দরকার।
প্রশ্ন : নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে যখন আপনাকে ও সোহানকে দুই ম্যাচ করে কিপিং করানোর কথা বললেন কোচ, তখনো কি যোগাযোগের ঘাটতি ছিল?
মুশফিক : সেটাই বললাম যে আমাকে বললেই তো হয়! আমি তো জানি যে আমি এখন শেষের দিকে। আমি তো আরো ১৫-২০ বছর খেলব না! যে কয়টা দিনই খেলি, আমার একটা প্রস্তুতি ছিল যে যখন ছাড়ব, আমার জায়গায় যে আসবে, সে যেন আমার চেয়েও আরো পোক্ত ও প্রস্তুত হয়ে আসে। আমি নিজেকে এখন সব সময় শুধু ক্রিকেটারই ভাবি না, মনে করি যে এই দলে মেন্টরও হতে পারি। আমি তাই নিশ্চিত করে চাই, যেখানে আমি শেষ করব, সেখান থেকে যেন ওরা শুরু করতে পারে। এটা আমার দায়িত্ব।
সোহানের কথা বলি… দলের পরিবেশ যদি অন্য রকম হয়ে যায়, ছেলেটা আমার দিকে তাকাতে সংকোচ করছে, আমারও ওর দিকে তাকাতে খারাপ লাগছে। এটাই স্বাভাবিক। এ জন্যই বলছি যে, এই ব্যাপারগুলো আরেকটু মসৃণভাবে করতে পারত। আমাকে বললেই হতো। আমার এমনিতেই পরিকল্পনা ছিল, বিশ্বকাপের পর ছেড়ে দিতে পারি (কিপিং)। আমার চেয়ে ওর (সোহান) সামর্থ্য বেশি এখানে। আমিই এটা করতে পারতাম। নিজে ওর হাতে (গ্লাভস) তুলে দিতে পারতাম। কেন সেটা হলো না, এটা তো আসলে জানি না।
অবশ্য নতুন কিছু না। মাশরাফি-সাকিব-তামিম-রিয়াদ যাঁর কথাই বলেন, এটা নতুন কিছু না!
উল্লেখ্য, মুশফিকুর রহিম একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার এবং বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক। তাকে টেস্টে বাংলাদেশের সেরা এবং সফল অধিনায়ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
স্টাম্পের পিছনে একটি পরম লাইভওয়্যার, মুশফিকুর রহিম, যিনি উইকেট-রক্ষকদের ক্লিচেড বর্ণনাতে যথাযথভাবে মানানসই। তিনি স্টাম্পের পিছনে দূর্দান্ত পারফর্ম করেন এবং একজন দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানও। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য তাকে প্রাথমিকভাবে খালেদ মাসুদের বিকল্প ক্রিকেট রক্ষক হিসেবে বাছাই করা হয়েছিল, কিন্তু সফরের খেলায় ব্যাট হাতে তার দক্ষতার দ্বারা তিনি সকলকে মুগ্ধ করেছিলেন, তাই ১৬ বছর বয়সে তাকে তার প্রথম টেস্টে একজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে তিনি লর্ডসে খেলা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হন। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য দলে ফিরে আসার আগে গোড়ালির চোটের কারনে তাকে কিছু দিনের জন্য দলের বাইরে থাকতে হয়েছিল।
বাংলাদেশের প্রাক্তন কোচ জেমি সিডন্সের মতে, রহিমের ব্যাটিং এতটাই বহুমুখী যে তিনি টপ অর্ডারে এক থেকে ছয় পর্যন্ত যেকোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারেন। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরার তিনি। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তিনিই প্রথম এবং একমাত্র উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান যিনি দুটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। এছাড়াও তিনিই প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। মুশফিকই একমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড় যিনি ১৫০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতেছেন।