Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / economy / মুদ্রানীতিতে উপেক্ষিত ইসলামি ব্যাংকিং, উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা

মুদ্রানীতিতে উপেক্ষিত ইসলামি ব্যাংকিং, উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা

দেশে প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার পর আশির দশকে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকিং যাত্রা শুরু করে। ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল এই ব্যাংকিং ব্যবস্থা দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশের মোট ব্যাংকিং খাতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অবদান শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর। কিন্তু ব্যাংকিংয়ের জন্য আলাদা কোনো আইন নেই।

বুধবার ঘোষিত মুদ্রানীতিতেও ইসলামী ব্যাংকিং সুদ বা বিনিয়োগের নির্দেশনা নেই। তাই সুদের হারের ওপর ভিত্তি করে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ভূমিকা কী, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধিকে অন্যতম কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছে। চলতি অর্থবছরে (2023-24) সুদের হারের সীমা শুরু থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুদের হার বাড়িয়ে বাজারে টাকার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সভায় খসড়া অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার আজ বিকাল ৩টায় মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন; ইসলামী শরীয়ত সম্পর্কে কোন কথা নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মাজবাউল হক বলেন, মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য হবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। আজ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। অতীতের কোনো মুদ্রানীতিতে ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে আলাদা কোনো নির্দেশিকা ছিল না। ব্যাংক কোম্পানি আইন ও বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো চলছে। তাতে কোনো সমস্যা নেই।

ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকিংয়ে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। মোট বিনিয়োগ ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এ খাতে সুদ বা চক্রবৃদ্ধি সুদ বলে কোনো বিষয় নেই। এখানে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া। ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ব্যাংকিং করা হয়। তবে আলাদা আইন হলে ভালো হবে। আর মুদ্রানীতিতে বিশেষ বিধান উল্লেখ করতে হবে। তা না হলে মুদ্রানীতি বাস্তবায়নে সুদের হার বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের অধীনে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে দেশে মোট ১০টি ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণ ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। এ ছাড়া আরও ৬টি ব্যাংকের আলাদা শাখা ও জানালা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের মোট শাখা ১ হাজার ৬৭১টি, প্রচলিত ব্যাংকের শাখা ১৫টি এবং উইন্ডোজ ১৫টি। সব মিলিয়ে প্রচলিত ব্যাংকের জানালা রয়েছে ৬১৫টি।

অর্থনীতিবিদ মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ব্যাংকগুলো মুনাফা ভাগাভাগির নীতিতে কাজ করে। এর জন্য ধর্মীয় অনুভূতি একটি বড় ভূমিকা পালন করে। ফলে প্রচলিত ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রচলিত ব্যাংকের আমানতের ওপর সুদ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইসলামী শাখা এবং ইসলামিক জানালার সুদ নির্দিষ্ট নয়। প্রচলিত ব্যাংকগুলো নির্ধারিত সুদের হারের বেশি দিতে পারে না, তবে ইসলামী ব্যাংকগুলো চাইলে বেশি দিতে পারে। তবে সুনির্দিষ্ট আইন ও মুদ্রানীতিতে স্পষ্টতার অভাব হতাশাজনক।

About Zahid Hasan

Check Also

রিজার্ভ নিয়ে বিশাল বড় সুসংবাদ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *