হঠাৎ করে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার তার উন্নত চিকিৎসা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে বেগম জিয়ার পরিবার থেকে আবরও আবেদন করা হয়েছে সরকারের কাছে বিদেশে চিকিৎসা সেবা গ্রহনের অনুমতির জন্য। তবে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সাড়া মেলেনি। তবে অনেকেই তার চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ তিনি বেগম জিয়াকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন এবং জানালেন তার শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাকে সুস্থ করতে হলে, তার জীবন বাঁচাতে হলে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে হবে। কিন্তু এই সরকার তার চিকিৎসায় বাধা দিচ্ছে। বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। তাই আসুন একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন বাঁচাতে দলমত ও সকল শ্রেণি পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করি। যাতে সরকার তাকে বিদেশে পাঠাতে বাধ্য হয়। আজ বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়ে হাসপাতালের বাইরে মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে আহ্বান জানাবো- অপরাপর সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ- এমন ভাবে চাপ তৈরি করুন- যেন সরকার বাধ্য হয়ে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। হাসপাতালে আমি চিকিৎকদের সাথে কথা বলেছি। চিকৎসকরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাকে সুস্থ করতে হলে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। পোস্ট কোভিড নতুন পুরাতন রোগগুলো অত্যন্ত জটিলাকার ধারণ করেছে। বর্তমানে তিনি সিসিইউতে আছেন। সেখানে এরকম একজন রোগীকে দেখতে যাওয়া দুরূহ বিষয়। ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সাথে আমি কথা বলে যা বুঝেছি, বেগম খালেদা জিয়ার যে রকম চিকিৎসা দরকার- সে রকম সুযোগ এখানে একেবারেই নেই। তারপরও ডাক্তাররা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
সরকার বলছেন, তারা মানবিক। এই কি তবে মানবিকতার নমুনা? যে কোনো ডাক্তার ছাড়াও একজন সাধারণ নাগরিকও মনে করবে না- এরকম গুরুত্বপূর্ণ একজন রোগীকে এভাবে চিকিৎসা করতে হচ্ছে? তারা তো ওবায়দুল কাদেরের জন্য বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে বিমানে করে আবার বিদেশে পাঠালেন। রাষ্ট্রপতি বিদেশে গেলেন, প্রধানমন্ত্রীও চিকিৎসা করালেন বিদেশে। আর শুধুমাত্র তার জন্য কেন এতো বাধা? আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার কাছে আহ্বান জানাবো- অপরাপর সকল রাজনৈতিক সামাজিক ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দকে। আপনারা এমন ভাবে চাপ তৈরি করুন- যেন সরকার বাধ্য হয়ে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ৩ বার বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে বর্তমান সময়ে তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় সাজা ভোগ করছেন। এই সাজার ভিত্তিতেই তার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকা স্বত্তেও চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে। এবং এই বিষয়ে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন সাজা প্রাপ্ত আসামী হয়েও অন্যান্যদের থেকে তিনি বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে।