গতাকাল (মঙ্গলবার) অর্থাৎ ১৮ নভেম্বর দুপুরের দিকের ঘটনা। দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের সহ-সম্পাদক আতাউর রহমান কাবুল প্লাটুন হতে কলাবাগান যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রান্সসিলভা নামক একটি বাসে ওঠে পড়েন। বাসের যিনি কন্ডাক্টর তিনি বাড়তি ভাড়াসহ নিয়ে নিলেন বিশ টাকা। তিনি বাসের ভাড়ার বিষয়ে একাই প্রতিবা’দ শুরু করেন কারন ঐ বাসের অন্য যাত্রীরা নিরব ছিলেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাসের ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করা হলেও তা অনেক বেশি মনে হচ্ছে, এই বলেই প্রতিবাদ শুরু করলেন। কিন্তু কন্ডাক্টর কোনো তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত ভাড়ায়ই দাবি করলেন, তার গোয়ার্তুমির কারণে কোনো লাভ হয়নি।
এরপর তিনি সামনের চেকারের কাছে অভিযোগ করেন এবং বলেন, “আপনি বাসের সাথে সংযুক্ত চার্টে যেভাবে লেখা আছে সেভাবেই ভাড়া দেবেন।” তিনি আরও দেখলেন, চেকার সাহেব বাসের কন্ডাক্টরের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েছেন।
আতাউর রহমান কাবুল দেখলেন, চার্টে পল্টন থেকে কলাবাগান পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা করে লেখা। সে হিসেবে তার কাছ থেকে ১০ টাকাই নেওয়ার কথা। কিন্তু ডাবল টাকা কেন নেওয়া হলো আবারও কন্ডাক্টরকে জিজ্ঞাসা করলেন। কন্ডাক্টর কোনো সদুত্তর দিতে পারলেন না, টাকাও ফেরত দিলেন না। বরং এভাবে সব বাসযাত্রীর কাছ থেকে ইচ্ছে মতো ভাড়া নিলেন। বাস কন্ডাক্টরের বক্তব্য, ‘এটা মালিক জানেন, আমি সামান্য চাকরি করি মাত্র।’
এরপর আতাউর রহমান কাবুল ৯৯৯-এ ফোন দিলেন। ট্রিপল নাইন থেকে ওই বাসের লোকেশন জানতে চাওয়া হলে জানালেন, বাসটি হাইকোর্ট ক্রস করছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগে পৌঁছাবে। গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৬৮৩। ট্রিপল নাইন থেকে শাহবাগ থা’/নার ডিউটি অফিসারের নম্বর দেওয়া হলো এসএমএস করে। এরপর কাবুল ডিউটি অফিসারকে ফোন দিয়ে অভিযোগটি জানালেন। ডিউটি অফিসার পু’/লি’শ ফো’র্স পাঠিয়ে শাহবাগে বাসটিকে আ’/টক করলেন।
শাহবাগ থা’/না পু’লি’/শের এসআই রয়েল জিয়ার নেতৃত্বে চার সদস্যের ফো’র্স বাসটিকে থামিয়ে চালক এবং কন্ডাক্টরকে নামালেন। তিনিও গাড়ি থেকে নেমে পু’/লি’শকে বিস্তারিত জানালেন। খবর পেয়ে সেখানে এলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট শামীম। পু’/লি’শ সদস্যরা অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকেও অভিযোগের সত্যতা পেলেন। এরপর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস কাগজ নিয়ে তাৎক্ষণিক মা’মলা করে জরিমানা করলেন ৬ হাজার টাকা। ট্রাফিক পু’/লি’শ সূত্রে জানা গেল, ট্রান্সসিলভা পরিবহনের এই গাড়িটির এটা দ্বিতীয় মা’/ম’লা। আগে তিন হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছিলেন অন্য মামলায়। এজন্য এখন ডাবল জরিমানা হলো।
আতাউর রহমান কাবুল ঘটনাটির বিস্তারিত জানিয়ে ফে’সবুকে স্ট্যাটাসে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন এটা রীতিমতো অরাজকতা! আমরা সাধারণ পাবলিক ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসের নতুন ভাড়া সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত। তারপরও কোন হিসেবে বাস কন্ডাক্টররা যাত্রীদের কাছ থেকে এভাবে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে? এসব কি দেখার কেউ নেই? কাউকে না কাউকে তো প্রতিবাদ করা উচিত। এজন্যই আমি প্রতিবাদ করেছি।’
যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ৯৯৯ কে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই পু’/লি’শ হটলাইন সত্যিই একটি মহান ধরনের সেবা, যেটার মাধ্যমে মানুষ তাৎক্ষনিক সেবা পাচ্ছে। এই ধরনের সেবা অন্য কোনো ভাবে পাওয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট পু’/লি’শ ভাইদেরকে ধন্যবাদ কারন তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ ধরনের অ’ন্যা/য় কাজের সাথে জড়িতদের শাস্তি দেওয়ার জন্য।
আসুন, আমরা সবাই মিলে এই ধরনের অ’ন্যায় যেটা হচ্ছে আমাদের চারপাশে সেটার প্র’তিবাদ করি। মনে রাখবেন, আপনার হাতের মুঠোফোনটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য একটি অন্যতম উপায় এবং একটি মহান অ’/’স্ত্র। আর এইভাবে সকলে যদি প্রতিবাদ করার জন্য এগিয়ে আসেন তাহলে আমাদের সমাজে যে অনা’চার এবং অন্যয় সৃষ্টি হচ্ছে সেটা আর থাকবে না, মুছে যাবে অনিয়ম-অবিচার, অন্যভাবে পারবেন না।