Thursday , November 28 2024
Breaking News
Home / Politics / বিরোধী দলে যেতে চাইছে না কেউই

বিরোধী দলে যেতে চাইছে না কেউই

টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আসন জয়ী সব দলই এই নতুন সরকারের অংশ হতে চায়। এমনকি আওয়ামী লীগের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টি (জাপা) বিরোধী দলে থাকার চেয়ে সরকারে থাকতেই বেশি আগ্রহী। এ জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে দরকষাকষি করছে দলটি। দলটির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের অবিলম্বে শপথ না নেওয়ার বিষয়ে গতকাল জাপা যে তথ্য দিয়েছে, তা দর কষাকষির অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

গত রোববার দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাপা ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, জাসদ ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে দুটি আসনে জয়ী হয়েছে। আর জাতীয় পার্টিও সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া আসনটি জিতেছে। তারপরও আওয়ামী লীগের পর জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দলটি এবার শুধু বিরোধী দলে থাকতে চায় না। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, নতুন মন্ত্রিসভায় থাকার জন্য জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করছেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় সেবার জাপা নির্বাচন-পরবর্তী সরকারে যেমন ছিল, তেমনি সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল। সেই উদাহরণ নিয়ে দলটি সরকারে জায়গা পেতে চায়। বলা হয়, জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের পাশাপাশি সরকারে অংশ নিতে চাইলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়নি।

বিরোধী দলে যাওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টির দর কষাকষির কারণে সংসদে বিরোধী দল কে হবেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, জাতীয় পার্টিকে সামনে রেখে সবকিছু নিয়ে ভাবা হচ্ছে। জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের নিয়ে সংসদে জোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মাধ্যমে বিরোধী দলের আসনে কে বসবেন, সেই সমাধানে পৌঁছানো যাবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংবিধান ও সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি মোতাবেক বিরোধী দলের সমস্যার সমাধান করা হবে। কোনটা বৈধ ও ভালো সেটা সংসদ নেতাই ঠিক করবেন।

নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সম্পর্কে আপনি কী ভাবছেন, ৩ হাজার ৫৯ জন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত; যাদের মধ্যে ১৫ জন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। অন্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মী, দলীয় মনোনীত জনপ্রতিনিধি। শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তারা সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে চান না।
তবে স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগের সদস্য নয় বলে দাবি করেন বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার সচিবালয়ে তিনি বলেন, যারা স্বতন্ত্র হিসেবে জিতেছেন, তারা মনে করলে স্বতন্ত্র হিসেবেই থাকবেন। তারপর দেখা যাবে কতজন স্বতন্ত্র হিসেবে থেকে গেল। যদি দেখা যায়, তারা ফ্রন্ট করবে, তাহলে বোঝা যাবে কে হবে বিরোধী দল। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে।

অবশ্য বিরোধী দল সরকারে থাকবে কি না তা নিয়ে স্বতন্ত্রদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কুষ্টিয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন কামারুল আরেফিন। মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা আরেফিন বলেন, আমি আমার নেত্রীর সঙ্গে আছি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, তার আদর্শে চলব। জোট করে বিরোধী দল করার চিন্তা নেই।

অন্যদিকে ফরিদপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য একে আজাদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চাইলে তিনি বিরোধী দলের নেতা হতে রাজি। গতকাল ফরিদপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই অনেক বিদেশি আমাকে ফোন করে বলেছেন, তারা আপনাকে নিয়ে ভাবছেন, আপনি বিরোধী দলের নেতা হতে রাজি আছেন কি না। আমি বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমরা তার আলোচনার বাইরে যেতে পারি না।

হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, “কি হবে কি হবে না, আমি নিশ্চিত নই। আমরা প্রথমে যাব, সবাই এককভাবে বসব, তারপর এ বিষয়ে কথা বলতে পারব। তবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত।

About Zahid Hasan

Check Also

‘আ.লীগ রঙ দেখছে, কিন্তু রঙের ডিব্বা দেখেনি’ দল যে সিদ্ধান্ত নেবে মাথা পেতে নেব

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *