বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাংলায় দ্বাদশ জাতীয় পরিষদের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ভিন্ন। কোনো পর্যবেক্ষক না পাঠানো হলেও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ভোটটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তবে বিভিন্ন বিষয়ে দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখবে বলে জানান তিনি।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ভোট উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেয়। বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে গিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। নির্বাচনের পরদিন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানের, অবাধ ও স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করলে ঠিক উল্টো সুর পর্যবেক্ষক না পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার স্থানীয় সময় সোমবার (৮ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে।” আমরা লক্ষ্য করেছি, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে। তবে হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সাথে এই মতামত শেয়ার করে যে নির্বাচনটি অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না এবং যে দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাদের জন্য আমরা দুঃখিত।
এছাড়া নির্বাচন ঘিরে স/হিংসতার নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। একই সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি মিলার বলেন, দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে মুক্ত ও উন্মুক্ত রাখতে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখবে, বরং আমরা দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে একই দিন জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্ব সংস্থার মুখপাত্রের মতে, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাজনৈতিক দলগুলোকে যেকোনো স/হিংসতা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত রোববার (৭ জানুয়ারি) সারাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারী ফলাফল অনুযায়ী, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২২টি আসন পেয়েছে, জাতীয় পার্টি ১১টি আসন পেয়েছে। তবে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ের হার বেশি। তারা জিতেছে ৬২টি আসন। আর ওয়ার্কার্স পার্টি ও মহাজোটের শরিক জাসদের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে একটি করে আসন পেয়েছেন। কক্সবাজারের একটি আসন থেকেও জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
এ ছাড়া /কারণে ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থীর মৃ/ত্যুর কারণে ওই আসনে পরবর্তীতে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে ইসি।
এই নিরঙ্কুশ বিজয়ে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এ ছাড়া ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, ব্রাজিল, মরক্কো, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতরা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেন।