বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম আসাদুর রহমান বলেন, নৌকায় ভোট না দিলে ভোটার আইডি থেকে আপনার নাম মুছে ফেলা হবে। বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আলমের পক্ষে নির্বাচনী সভায় ভোটারদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসাদুর রহমানের বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সভায় নৌকার প্রার্থী মোস্তফা আলম ও বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এবারের নির্বাচনেও আসাদুর রহমান বগুড়া-৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত দলের প্রার্থী হিসেবে মোস্তফা আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে আসাদুর রহমান ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের সম্মানের আসনে বসিয়েছেন। সেই শেখ হাসিনাকে ভোট দেবেন না, অন্য কাউকে ভোট দেবেন? তাহলে ভোটার আইডি কার্ড থেকে আপনার নাম আবার কর্তন হয়ে যাবে।’ বর্তমান সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ নানা উদ্যোগ ও উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা এত কিছু করার পরেও যদি ভোট না দেন তাহলে কি ভোটার আইডি কার্ডে আপনাদের নাম আর থাকবে? থাকবে না।’
এ কে এম আসাদুর রহমান নৌকার প্রার্থী মোস্তফা আলম সম্পর্কে বলেন, “আমিও এ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। শেখ হাসিনা বলেছেন, “তোমার চেয়ে নান্নু (মোস্তফা আলম) ভালো।” চাঁদেরও কলঙ্ক আছে, কিন্তু নান্নুর কোনো কলঙ্ক নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুর রহমান শনিবার বলেন, আমি নৌকা নির্বাচনী সভায় কার্ড থেকে নাম মুছে ফেলার কথা বলেছি, এটা সত্য। তবে শুধু ভোটার আইডি থেকে নয়, বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা তালিকার কথাও বলেছি। আওয়ামী লীগ সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা সহ।এর অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমি আসলে বলতে চেয়েছি, এই সরকার আইডি কার্ডসহ নানা তালিকায় আপনাদের নাম দিয়েছে। নৌকায় ভোট না দিলে, ক্ষমতায় অন্যরা এলে তালিকা থেকে নাম কর্তন হতে পারে।’
বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, কোনো প্রার্থীকে ভোট না দিলে ভোটার আইডি কার্ড বা কোনো ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে আপনার নাম বাদ দেওয়া হবে, এটা অপপ্রচার। কোনো প্রার্থীর পক্ষে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হলে তা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। কোনো প্রার্থী এ ধরনের মিথ্যাচার করলে নির্বাচন তদন্ত কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। লিখিত অভিযোগ তদন্ত কমিটির নজরে আনা হবে।