গোটা বিশ্ব জুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজ করছে ভাইরাস ভীতি। এই ভাইরাসের তীব্র প্রকোপে বিশ্বের ধনী-গরীব সকল দেশ নানা ধরনের ক্ষতির কবলে পড়েছে। এবং বিশ্ব জুড়ে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের সংকট। সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্যে সংকট দেখা দিয়েছে। এবং বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ভোগ্যপন্যের দাম। এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। দেশটিতে ভোগ্যেপন্যের দামের দিক দিয়ে ৩১ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালো দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সরবরাহ বিপর্যয় ও কর্মী সংকটে কো/ভি/ড-পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রায় সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির কারণে জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। অক্টোবর মাসে ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির নতুন রেকর্ড হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বছর ভিত্তিতে অক্টোবরে দেশটিতে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ছয় দশমিক দুই শতাংশ, যা গত তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শ্রম বিভাগ (বিএলএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) সূচক অনুযায়ী গত বছর একই সময়ের তুলনায় ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে রেকর্ড ছয় দশমিক দুই শতাংশ, যা ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে ৩১ বছরে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে খাদ্য ও জ্বালানি বাদে অন্য ভোগ্যপণ্যের দাম অক্টোবরে বেড়েছে চার দশমিক ছয় শতাংশ, যেখানে আগের মাসে সিপিআই সূচক ছিল পাঁচ দশমিক চার শতাংশ। অন্যদিকে মাসিক ভিত্তিতে অক্টোবরে দেশটির সিপিআই সূচকে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরেও ছিল শূন্য দশমিক চার শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের প্রতিবেদন বলছে, খাদ্য ও বিদ্যুতের দাম বাদ দিয়ে মূল সিপিআই বেড়েছে শূন্য দশমিক চার শতাংশ। একই সময়ে বার্ষিক মূল মূল্যস্ফীতি চার দশমিক ছয় শতাংশ বেড়ে ১৯৯১ সালের আগস্টের পর থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। সম্প্রতি দেশটির জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এক মাসের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ১২ দশমিক তিন শতাংশ। আর গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এর মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৫৯ দশমিক এক শতাংশ। একইভাবে অক্টোবরে দেশটিতে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে চার দশমিক আট শতাংশ, যা বছর ভিত্তিতে মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০ শতাংশ।
কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের কৃষি বিষয়ক সংস্থাটি গোটা বিশ্বের খাদ্যে সংকট প্রসঙ্গে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে বিশ্বের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যে নিয়ে বেশ কিছু শঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। তবে বিশ্বের সকল দেশই নিজ নিজ জায়গা থেকে এই চলমান সংকট মোকাবিলায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।