Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। নির্বাচন ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। সোমবার সন্ধ্যায় তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন যে ১০ ডিসেম্বরকে লক্ষ্য করে বাংলাদেশের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার কোন সম্ভাবনা নেই, যা আমি আমার আগের ব্রিফিংয়ে (প্রায় দুই সপ্তাহ আগে) যুক্তি দিয়েছিলাম।

আবারো সেটি পুনর্ব্যক্ত করছি। ২০২১ সালের ১০ই ডিসেম্বর র‌্যাবের ৭ জন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, সেই থেকে এ নিয়ে আলোচনা শুরু। আমরা তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে এনগেজ করেছি। র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উঠলে সরকার যে প্রক্রিয়াগুলো ফলো করতো তা নিষেধাজ্ঞা আসার আগে প্রকাশ করা হতো না। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, এটি সেয়ার করা হয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়াটিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। দুই বছর ধরে অপরাধ দমনে অনেক র‌্যাব সদস্য নিহত হয়েছেন। অপরাধীরাও মারা গেছে।

তবে এটা সত্য যে আমরা প্রতিটি ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করেছি, ব্যবস্থা নিয়েছি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করেছি। এমনকি সময়ে সময়ে সাংবাদিকদের কাছেও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। র‌্যাব তার স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তদন্ত, ব্যবস্থা নেয়া এবং তা স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করার মতো একটি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ইনসিস্ট বা অনুরোধ করছিলো। আমরা তাদের চাওয়া মতো তা-ই করেছি। অনেক ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে। এজন্য আমরা খুব দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দূরে থাক, র‌্যাবের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাই উঠে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের লবিস্ট এবং তাদের অপপ্রচারের ভিত্তিতে কিছু অনুমানমূলক পরিস্থিতি সামনে এনে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার হাইপ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সব সময় বলে আসছি যে এটা অসম্ভব। কারণ আমরা মনে করি এটা পারস্পরিক নির্ভরশীলতার জায়গায় করা যাবে না। ব্যবসা কোনো দয়া বা পক্ষপাতিত্বের বিষয় নয় মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ একটি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া ইউরোপের বাজারে জিএসপি সুবিধার অস্তিত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের বোঝাপড়ায় অনেক সাহায্য করেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা পায় না। আগেও যখন পেতো তা খুব সিগনিফিক্যান্ট জায়গায় ছিল না। শ্রমখাতের উন্নয়নে ইউরোপ-আমেরিকার যে চাওয়া ছিল তা পূরণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফলে ইউরোপ থেকে নিষেধাজ্ঞার ছিটেফোঁটাও আসার আশঙ্কা নেই। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন নির্বাচনী মুডে আছি। আগামীতে নতুন সরকার গঠিত হবে। আমরা সেই গতি বজায় রাখার চেষ্টা করব।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের  ভুল বোঝাবুঝির অবসানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদের অনেকবার বলেছিলেন মার্কিনিরা এত ঘন ঘন আসে কেন? তাদের এত হাই প্রোফাইল ভিজিটের কারণ কি?  ইস্যু বেড়েছে, গুরুত্ব বেড়েছে এসব বিবেচনায় তারা বাংলাদেশে এসেছেন। এটা কখনো একপক্ষীয় ছিল না। তবে হ্যাঁ, কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এখন যে অবস্থায় আছে, তাতে ভবিষ্যৎ বলে দিবে এখানে কিছু অবসান হওয়ার বাকি রয়েছে কিনা? তাদের যেসব বিষয়ে উদ্বেগ ছিল তার অনেক কিছুই আমরা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা খোলাখুলিভাবে তাদের অনেক কিছু বুঝিয়েছি এবং আমার বিশ্বাস তারা বুঝেছেনও। অতীতে এভাবে শেয়ার করা হয়নি দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন,  এর কারণে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া যারা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা প্রভাবিত ছিল, আমরা তাদের ধরতে পেরেছি এবং সংশোধন করতে পেরেছি। আমি বিশ্বাস করি তারা তাদের অবস্থান বুঝতে পেরেছে। কারা নির্বাচনে আসেনি তা দেখার সুযোগ নেই। নতুন সরকার নতুন সংকল্প নিয়ে আসছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আশা করি নতুন অঙ্গীকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে।

About Nasimul Islam

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *