হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সুপরিচিত চেনা মুখ। তিনি একাধিক গুনের অধিকারী। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক-ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এবং গীতিকার-চিত্রনাট্যকার এছাড়াও চলচ্চিত্র নির্মাতা। এই সকল ক্ষেত্রেই তিনি পেয়েছেন ব্যপক সফলতা এবং সম্মাননা। আজ এই কিংবদন্তির জন্ম দিন। এই বিশেষ দিনকে ঘিরে তাকে স্মরন করেছে অনেকেই। তাকে স্মরন করে বেশ কিছু কথা জানালেন কুদ্দুস বয়াতি।
যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, নির্মাতা হিসেবেও কম জনপ্রিয় ছিলেন না। ব্যতিক্রমী সব নাটক–সিনেমা বানিয়ে বাঙালিকে তিনি আ/ট/কে রাখতেন টিভির পর্দায়। বিশেষ করে তাঁর টিভি নাটকগুলো ছিল রসপূর্ণ। সেসব নাটকে যাঁরা অভিনয় ও গান করেছেন, বলা চলে তাঁদের অনেকেরই জনপ্রিয়তা ও প্রতিষ্ঠা লাভের পেছনে হুমায়ূন আহমেদের ছিল প্রত্যক্ষ ভূমিকা। জন্মদিনে সেই ভূমিকার কথা স্মরণ করলেন শিল্পীরা। গান ভীষণ ভালোবাসতেন হুমায়ূন আহমেদ। যেখানেই যেতেন, আয়োজন করে গানের আসর বসাতেন। আবদুল কুদ্দুস বয়াতি নিয়মিতই গান শোনাতে যেতেন তাঁকে। বয়াতির সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের আনুষ্ঠানিক পরিচয় ১৯৮৮ সালের শেষ দিকে। ‘খাদক’ নাটকে ডেকে নেন তাঁকে।
কুদ্দুস বয়াতি বলেন, ‘তিনি আমার জ্ঞানগুরু। ডেকে নিয়ে গান করাতেন। সারা রাত গল্প করতেন। আমাকে বলতেন তোমার গ্রামের মেয়েরা কীভাবে ঝগড়া করে দেখাও তো। কোন কথাটা গ্রামের লোকেরা কীভাবে বলে, সেসব আমার অভিনয় করে তাঁকে দেখাতে হতো।’ বাংলাদেশ সরকার যখন প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করল, এর প্রচারণার জন্য হুমায়ূন আহমেদ ডেকে পাঠালেন কুদ্দুস বয়াতিকে। বললেন, ‘তুমি হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো বাঁশি বাজিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাবে।’ বয়াতি বললেন, ‘আমি লেখাপড়া জানি না! কোনো দিন স্কুলের সামনে দিয়েও যাইনি। আমাকে দিয়ে শিক্ষার কাজ করাবেন!’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই জন্যই তুমি করবা। শিক্ষা যে কত জরুরি, এইটা তুমি বললেই লোকের ভালো লাগবে। শিক্ষা না থাকলেও তুমি শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবা। হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা বাচ্চাদের নিয়ে পালিয়ে গেছে, তুমি নিয়ে যাবা স্কুলে।’ কুদ্দুস বয়াতি বলেন, ‘স্যার লিখলেন, আমি সুর করে গাইলাম, “এই দিন দিন নয় আরও দিন আছে, এই দিনেরে নিবে তারা সেই দিনেরও কাছে”।’ জন্মদিনে হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুদ্দুস বয়াতি বলেন, ‘প্রতিভা অনেকেরই থাকে, কিন্তু কারও প্রতিভা বিকশিত হয়, কারও হয় না। একজনের হাত ধরে আরেকজন ওঠে। প্রতিভাবানদের বিকাশের জন্য যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে হুমায়ূন স্যার গুরুত্বপূর্ণ একজন।
লোকসঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতি। তিনি নব্বই দশক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই সঙ্গীত অঙ্গনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এবং তিনি অসংখ্য গান করেছে। তিনি তার গানের মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছেন ব্যপক সফলতা এবং সম্মাননা।