নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এক লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই।
আজ রোববার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। আবদুল কাদের মির্জা সেখানে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমার কাছ থেকেও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এক লাখ টাকা নিয়েছেন। পুলিশ ফোর্সের নানা ধরনের খরচ আছে বলে ওসি আমার কাছে টাকা চায়। আমি আমার কর্মচারী করিমকে দিয়ে সেই টাকা ওসির কাছে পাঠিয়ে দিই। দেশের যে কোনো আদালতে আমি এর প্রমাণ দিতে পারব। গরু চুরির সঙ্গেও পুলিশ জড়িত। পুলিশের কারণে এখানকার মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। একটা গরুও কেউ রাখতে পারে না। সালিস বাণিজ্য করে পুলিশ দুই পক্ষ থেকে টাকা খেয়ে চুপ করে বসে থাকে।’
পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতিবাজরা জামায়াত-বিএনপির টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, আগুন লাগাচ্ছে, নৈশ প্রহরী হত্যা করছে, সোনার দোকানে ডাকাতি করছে, গরু চুরি করছে। ‘পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা লোকজন জামায়াত-বিএনপির টাকা খেয়ে অগ্নিসংযোগ, নৈশপ্রহরী হত্যা, স্বর্ণের দোকান লুট ডাকাতি, গরু চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই এখানে একজন জামায়াত-বিএনপিকেও পুলিশ ধরেনি। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য।যেখানেই পাবেন থানায় সোপর্দ করবেন। ধরে দেওয়ার পর পুলিশ না রাখলে আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাব। আজই আমি আমার নেত্রীর সঙ্গে কথা বলব।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রশ্নে তিনি বলেন, নোয়াখালীর এসপি ও ওসি সাংবাদিকদের ছদ্মবেশী করে পত্র-পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। মি নাকি ‘‘হেলমেট বাহিনী’’ পালি। এখানে কী হেলমেট বাহিনী আছে? আমার হেলমেট বাহিনী আছে, তাদের এসপি ও ওসি বলে। আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করুন। সোচ্চার হোন, ভয় পাবেন না। বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন পর্যন্ত এখানে থাকার দরকার নেই। যেহেতু তারা ভোটে নেই, তারা কেন এখানে থাকবে? প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকে তারা হত্যা, ছিনতাই, ছিনতাই, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াতকে উসকানি দিয়ে নোয়াখালীর এসপি ও ওসি এখানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে মেয়র কাদের মির্জা বলেন, “এ অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না। প্রশাসন যদি সংশোধন না হয়, তাহলে নারী-পুরুষ জনমত সৃষ্টি করবে। তাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু–মিছিল করা হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ না করে এখানকার পুলিশ হরতাল-অবরোধের সময় থাকে না। তারা আমাকে এবং আওয়ামী লীগকে পাহারা দেয়। আমরা এসপি-ওসিকে চিনি। আমরাও জানি তারা কোথায় কী করে। ভালো না লাগলে ভালোয় ভালোয় এখান থেকে চলে যান।’