চলতি বছরের ২৮ মার্চ চেক অনার মামলায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও নান্দেল উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক লুৎফুন্নাহার লাখীরকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর তাকে ধরতে পুলিশের একটি দলের অভিযান ব্যর্থ হয়। গত শনিবার গভীর রাতে ময়মনসিংহের নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুরের বটুয়াদী গ্রামে অভিযান চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুন্নাহার লাকী ওরফে এল নাহার নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের ওই গ্রামের মো. শামছুল আলম খন্দকারের কন্যা।
২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিংরুইল ইউনিয়নের তেলিয়া গ্রামের আনিসুল হকের মেয়ে নান্দেল উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য লাভলী আক্তারকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন। টাকা দেওয়ার সময় তিনি নিজের মোবাইলেও ধারণ করে রাখেন। পরে দীর্ঘ দিনেও চাকরি না দেওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর নান্দাইল কৃষি ব্যাংক শাখার একটি চেক (চেক নং-৭৮৩৯০২৮) দেন নেত্রী লাকী।
পরে ওই বছর নান্দালে থানায় মামলা করেন তিনি। মামলার দীর্ঘ তদন্তের পর ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে একাধিকবার নোটিশ পাঠানোর পরও কোনো সমাধান না পেয়ে আদালত নেগেটিভ ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় পরোয়ানা জারি করে। এরপরও তিনি হাজির না হওয়ায় আদালত তাকে পলাতক দেখিয়ে পত্রিকায় নোটিশ প্রকাশ করেন।
পরে তার অনুপস্থিতিতে ময়মনসিংহ যুগ্ম ও জেলা দায়রা জজ ২য় আদালত ঘটনা সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৩ সালের ২৮শে মার্চ লুৎফুন্নাহার লাকীকে বিনাশ্রমে এক বছরের কারাদণ্ড দেন। এরপর থেকে সে পলাতক।
মামলার বাদী ময়না জানান, গত শনিবার রাতে তিনি খবর পান দণ্ডপ্রাপ্ত লাকী তার বাড়িতে অবস্থান করছেন। এ খবর পেয়ে তিনি থানায় খবর দিলে শনিবার রাতে একদল পুলিশ তার (লাকি) বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায়। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তাঁকে আর খোঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে মামলার বাদীনি ময়না জানান, তিনি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই পুলিশের সঙ্গে তিনিও অভিযানে ছিলেন। কিন্তু চোখের সামনে যা ঘটল তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
নান্দালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুজ্জামান বলেন, সাজাপ্রাপ্ত লাকির নামে থানায় আরও পাঁচটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করছে। শনিবার রাতে লাকির বাড়িতে গিয়েও তাকে পায়নি পুলিশ। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে।