Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / National / নৌকার প্রার্থী হয়ে এলাকায় গিয়ে বৈঠকে প্রকাশ্যে বন্দুক প্রদর্শন শাজাহান ওমরের, শোকজে ‘বন্দি’ ইসির হুঙ্কার

নৌকার প্রার্থী হয়ে এলাকায় গিয়ে বৈঠকে প্রকাশ্যে বন্দুক প্রদর্শন শাজাহান ওমরের, শোকজে ‘বন্দি’ ইসির হুঙ্কার

ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ঝালকাঠি-১ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এই রাজনৈতিক নৌকার প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে লাইসেন্স করা বন্দুক প্রকাশ্যে প্রদর্শন করেন, যা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় নির্বাচন কমিশন। অভিযোগের জবাব দেওয়ার আগে তিনি নির্বাচন কমিশনে এসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। বলেছেন আচরণবিধির কপি তার কাছে নেই!

 

অন্যদিকে মাগুরা-১ থেকে প্রথমবারের মতো লড়ছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি এলাকায় গিয়ে রাজকীয় সংবর্ধনা নেন। এ কারণে তিনি শোকজও হয়েছিলেন। জবাবে বিশ্বের সেরা এই ক্রিকেটার বলেন, প্রথমবার বাছাইয়ের কারণে নিজের অজান্তেই তিনি ভুল করতে পারেন। তবে সামনে সাবধান।

শুধু এই দুই প্রার্থীই নন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত (৫ ডিসেম্বর) বিভিন্নভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৭৫ জনকে দণ্ডিত করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে। এই তালিকায় মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে একাধিকবার এমপি এবং নতুন প্রার্থীদের নাম রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা জরিমানার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

 

তবে নির্বাচনী আচরণবিধির ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, প্রার্থীরা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এই ধারায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করতে পারে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইসি শোকজে সীমাবদ্ধ ছিল।

যদিও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

তবে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সতর্ক করে বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী প্রার্থীদের ক্ষমা করা হবে না।

জামালপুরে ফেরাসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ইসি আলমগীর বলেন, অনেকেই আচরণবিধি পড়েন না। কোনো প্রার্থী কর্তৃক বারবার আচরণবিধি লঙ্ঘন ক্ষমা করা হবে না।

এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র থেকে মোট ২ হাজার ৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৮৫ জনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছে কমিশন এবং বাকি ৭৩১ জনকে। এরই মধ্যে ১৮৩ জন প্রার্থিতা ফেরত পেতে ইসির কাছে আবেদন করেছেন।

এদিকে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুপারিশ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমরা এখনো কোনো তদন্ত কমিটির কাছ থেকে এ ধরনের কোনো সুপারিশ পাইনি। সুপারিশ পাওয়ার পরই কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা ইসির গাফিলতি দেখছেন তাদের কাজ শুধু শোকাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনও তাদের বিদ্যমান ক্ষমতায় প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক মো. বদিউল আলম মজুমদার ঢাকা মেইলকে বলেন, “নির্বাচন কমিশনাররা আচরণবিধি নিয়ে পরস্পরবিরোধী ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু তা লালন-পালনে একেবারেই উদাসীন। তারা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন। চাইলে প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারেন।” কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।সিইসি ইসির অন্তর্নিহিত ক্ষমতার কথা বলেছেন।কিন্তু তার কিছুই দেখা যাচ্ছে না।ফলে প্রার্থীরা বারবার আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে সবাই সতর্ক হবে।

 

আচরণবিধি মানতে ইসি কী করছে?

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে প্রথম ধাপে ৮০২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের আওতায় ২৮ নভেম্বর থেকে তারা দেশের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় কাজ শুরু করেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবেন। দ্বিতীয় ধাপে আরও বেশি নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্সে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। এরপর নির্বাচনের আগে আরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন।

 

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে শো-ডাউন, মিছিল, জমায়েত, ভোট চাওয়ার পোস্টারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অন্তত ৭৫ প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এসব ব্যক্তির কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যাও নেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তথ্য জানিয়ে বলেন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। তারা জরিমানা ও কারণ দর্শানোর নোটি জারি করছেন।

About Zahid Hasan

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *