প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন সম্প্রতি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিকে ইঙ্গিত করে একাধিক স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শেষ স্ট্যাটাসে খোকন লিখেছেন, ‘সারা জীবন দেখেছি, নৌকা পার মাঝি’। এখন দেখতেছি, নৌকা ব্যাবহার করা হচ্ছে, মাঝিদের পার করার জন্য। যে মাঝিকে নৌকাকে তীরে নিয়ে যায়, সেই নৌকায় যাত্রী উঠতে ভয় পায়। নৌকা যতই ভালো হোক, মাঝি ভালো না হলে যাত্রী সেখানে নিরাপদ না, সেই নৌকায় উঠে না। তারা বিকল্প মাঝি খোঁজে, যারা পরে সেই নৌকার মাঝি হবে।’
তার আগের পোস্টে খোকন লিখেছিলেন, “সারাদেশে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিস্তার ধীরে ধীরে নির্বাচনী যু/দ্ধকে আরও তীব্র করে তুলছে। এই নির্বাচনে অনেক অস্বাভাবিক বিষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও হবে।”
প্রথমত, এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্র। এর মানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কোনো সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তৃণমূলের সক্রিয় প্রার্থীরা নির্বাচনে এলে ভোটার উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বাড়বে। ফলে ভোটারবিহীন নির্বাচনের ভার আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে না। এতে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি, বিএনপি-জামায়াত ও বিদেশিরা এ অভিযোগ তুলতে পারে না।
প্রচারণা প্রত্যন্ত এলাকায়ও নির্বাচনী মেজাজ তৈরি করবে। এমপিদের কাছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের গুরুত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। গত ১৫ বছরে যেসব সাংসদ প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের অপমান করেছে তাদের এখন শিক্ষা নেওয়া উচিত।
বোঝা যাবে কে তৃণমূলের কাছে নৌকার আসল কর্ণধার। এতে কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব কমবে। জরিপের মাধ্যমে সঠিক তথ্য কেন্দ্রে যাচ্ছে কি না তা যাচাই করা হবে। তৃণমূল আগের মতো সক্রিয় থাকলে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন প্রতিহত করতে বা স/হিংসতা করতে সাহস পাবে না। নির্বাচনের মাঠ না খুলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচনে না এসে স/হিংসতাকারী জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়েও যে ভোট স্বতঃস্ফূর্ত ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে তা প্রমাণিত হবে। যা এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
ভোটার উপস্থিতি বাড়লে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সাধারণ জনগণ ও বিদেশিদের কাছে জামায়াত-বিএনপির গুরুত্ব কমে যাবে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনে অত্যন্ত সতর্ক থাকবে, তারা কোনো প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য কারচুপির প্রক্রিয়ায় জড়াবে না, এতে নির্বাচনে প্রশাসনের শক্তি কমে যাবে।
তবে স্বতন্ত্র নির্বাচনের কারণে তৃণমূল পর্যায়ে কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, নির্বাচনের পর কেন্দ্রকে নির্বাচিতদের নিয়ে সেই সমস্যা দূর করতে হবে। কারণ এবারের নির্বাচন অনেকটা নৌকার বিপক্ষে নয়, মনোনয়নপ্রাপ্ত নাবিকদের বিরুদ্ধে। এখন পর্যন্ত দেখা গেছে, সব স্বতন্ত্র প্রার্থীই এই দলের পরীক্ষিত যোদ্ধা, হাইব্রিড বা ঘাটের বিশেষ উদ্দেশ্যের মানুষ নয়।