ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে হঠাৎ দেখা করেছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান।
আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান তিনি। সেখানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের সঙ্গে দেখা করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও নেতারা অংশ নিচ্ছেন এমন খবরের মধ্যেই ডিবি কার্যালয়ে যান আখতারুজ্জামান। তিনিও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমন গুঞ্জন কয়েকদিন ধরেই চলছে। ডিবি প্রধানের সঙ্গে বিএনপির সাবেক এই নেতার সাক্ষাৎ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির একাধিক কর্মকর্তা। তবে কেন দেখা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে সে বিষয়ে ডিবির কেউ মুখ খোলেননি।
তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গনমাধ্যমকে বলেন, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান আমার এলাকার বাসিন্দা। তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন।
আখতারুজ্জামানকে ফোন করলেও তিনি তোলেননি। মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলেন। তিনি একজন স্পষ্টভাষী হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে দলের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
অন্তত পাঁচবার বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বিএনপির এমপিও ছিলেন। তিনি বিএনপির মনোনয়নে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ দল থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে সাবেক আইজিপি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নূর মোহাম্মদের কাছে হেরে যান তিনি। তবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন আরেক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ।
ওই আসন থেকে বিএনপির সাবেক নেতা আখতারুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বলে জানা গেছে। সেই প্রস্তুতিও নিয়েছেন তিনি। এতে এলাকার বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে আখতারুজ্জামান জানান, তিনি কটিয়াদী নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে তারা দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। বিএনপি নির্বাচনে না গেলে কী করতে হবে তা সময়ই বলে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, ১৯৯৬ সালে আখতারুজ্জামানকে প্রথমবারের মতো বহিষ্কার করা হয়। সে সময় সংসদ অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে বিএনপি। এদিন তিনি দলের সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদে থেকে যান। এর কিছুদিন পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে তাকে দ্বিতীয়বারের মতো বহিষ্কার করা হয়। তখন বিএনপি এই সরকার ব্যবস্থা বাতিলের জন্য আন্দোলন করেছিল। সেই সময় তিনি টিভি টক শোতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে কথা বলে বহিষ্কার হন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘বেয়াদব’ বলে তৃতীয়বার বহিষ্কৃত হন তিনি।। দলের সিনিয়র নেতাদের সমালোচনা করায় তাকে চতুর্থবারের মতো বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে দলীয় নেতাদের ব্যর্থতার সমালোচনা করলে অবশেষে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।