ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও জোরদার করতে হবে।
রোববার চট্টগ্রাম চেম্বারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া এদিন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতীয় হাইকমিশনার রোহিঙ্গা সংকট ও সীমান্ত হ”ত্যা নিয়ে কথা বলেন।
চেম্বারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাকালে বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশ একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। চারশত বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার।
এর সোনালী অতীত আছে। ভবিষ্যতের দিক থেকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে চট্টগ্রাম আরও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুদৃঢ় সম্পর্কের ওপর। তাই সেবা, উৎপাদন ইত্যাদি খাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, বন্দরের অবকাঠামো, যোগাযোগ ও উৎপাদন খাতে বাংলাদেশের কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এমনকি ভুটান, নেপালও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে লাভবান হতে পারে। তিনি বলেন, ভারত চট্টগ্রামের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা, বে-টার্মিনালের অর্থায়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আগ্রহী।
মাহবুবুল আলম বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ ও সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি উভয় দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ১০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রদূত এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
চেম্বার সভায় বক্তব্য রাখেন এস এম আবু তৈয়ব, অঞ্জন শেখর দাশ, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, মাহফুজুল হক শাহ, আমীর আলী হোসেন।
এ সময় চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার জনাব অনিন্দ্য ব্যানার্জি, রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী সঙ্গীতা দোরাইস্বামী, দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব দীপ্তি আলংঘাট, অতিরিক্ত কাস্টমস কমিশনার আবু নূর রাশেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এটা প্রশংসার দাবি রাখে।
এখানে রোহি”ঙ্গাদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তা চমৎকার। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
একই সঙ্গে সীমান্ত হ”ত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। সীমান্তে যে হ”ত্যাকাণ্ড হচ্ছে তা ইচ্ছাকৃত নয়।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় ভারতীয় হাইকমিশনার, চট্টগ্রামে নিয়োজিত সহকারী হাইকমিশনার এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সালাহ উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন। বৈঠকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন হাইকমিশনার।