Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / economy / ডলার শূন্য ২১ ব্যাংক, রেমিটেন্স প্রশঙ্গে জানা গেল আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ডলার শূন্য ২১ ব্যাংক, রেমিটেন্স প্রশঙ্গে জানা গেল আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ডলারের তীব্র সংকট রয়েছে। এর মধ্যে ২১টি ব্যাংকের কাছে কোনো ডলার নেই। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির জন্য তারা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছে না। অন্যান্য ব্যাংক থেকে ডলার সংগ্রহ সমন্বিতভাবে চলছে। এ কারণে কখনো কখনো ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ মাজবাউল হক বিষয়টি উল্লেখ করেন। তবে কোন কোন ব্যাংকে এই সংকট রয়েছে, তার নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে ডলারের কোনো সংকট নেই বলে দাবি করেন মজবাউল হক। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। এ দাবি স্বপক্ষে তিনি কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত বছর ২০ নভেম্বর সম্মিলিতভাবে নেট ওপেন পজিশন ছিল ঋণাত্মক। ব্যাংকগুলোতে ৪২৫ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ছিল। কিন্তু চলতি বছরের একই দিনে নেট ওপেন পজিশন ছিল ধনাত্মক। এ সময়ে সম্মিলিতভাবে ব্যাংকগুলোতে ১৯২ মিলিয়ন উদ্বৃত্ত ছিল।

আলাদাভাবে, গত বছরের ২০0 নভেম্বর ৩১টি ব্যাংকের ডলার উদ্বৃত্ত ছিল। অর্থাৎ সে সময় যত ডলার বিক্রি করেছিল তার চেয়ে বেশি কিনেছিল তারা। চলতি বছরের ২০ নভেম্বর ৩৯টি ব্যাংকে ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনে জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বৈদেশিক ঋণ ও দায় এবং ডলার সংকট নিরসনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরেন।

মুখপাত্র জানান, রপ্তানি-রেমিট্যান্স ও আমদানি সব ক্ষেত্রেই ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমিয়েছে বাফেদা। এতে করে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার মান বাড়বে। যেটা এতদিন ছিল উল্টোমুখী। আমদানি কমে যাওয়ার কারণে ডলার চাহিদা কমে এসেছে এবং আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিল পরিশোধের চাপ অতি নগণ্যতে নেমে আসবে।

রুপির বিপরীতে ডলারের দাম কমলেও রেমিটেন্স প্রবাহ বা প্রবাসী আয়ে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মাজবাউল হক। তিনি বলেন, বাজারে চাহিদা-সরবরাহ পরিস্থিতির আলোকে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেমিটেন্স প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যখন ডলারের দাম ছিল ৮৭/৮৮ টাকা, তখনো দেশে পর্যাপ্ত রেমিট্যান্স এসেছে। তাই ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোয় রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন আশংকা নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ডলারের অবস্থার অভাবনীয় উন্নতির দাবি করলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঋণপত্র খোলায় তাদের দুর্ভোগ কমেনি। ডলারের অভাবে বেশিরভাগ ব্যাংক এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না। রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার কাঁচামাল আমদানিতে তেমন সমস্যা না হলেও দেশী বাজারের জন্য যেসব ইন্ডাস্ট্রি পণ্য উৎপাদন করে তাদেরকে তীব্র সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। কাঁচামালের অভাবে তাদের উৎপাদনক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অব্যবহৃত রাখতে হচ্ছে। তাতে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে অনেক কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারি ছাঁটাই হচ্ছে।

কাঁচামালের মতো তৈরি পণ্য আমদানিতেও একই ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, শিশুর খাদ্য ইত্যাদি আমদানির জন্যও সহজে ক্রেডিট কার্ড খোলা হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএমএ ভবনের একটি মেডিকেল পণ্য বিপণন কোম্পানির মালিক অর্থিংকাকে বলেন, কিছু চিকিৎসা পণ্য আমদানির জন্য তিনটি ব্যাংকে গিয়েও তিনি এলসি খুলতে পারেননি। তাকে ব্যাংক থেকে বলা হয়েছে, ডলার যোগ করে নিয়ে আসুন, আমি এলসি খুলে দেব।

এদিকে খোলা বাজারে ডলারের সংকট কমেনি। সাধারণ মানুষ বিদেশে ভ্রমণ, চিকিৎসা বা উচ্চশিক্ষার জন্য ডলার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে, ডলার সংকটের কারণে, কিছু ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জানিয়েছে যে তারা ডিসেম্বর থেকে তাদের দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড অনুমোদন করবে। যারা ইতিমধ্যে ডলার অনুমোদন করেছেন, তাদের কার্ডেও ডিসেম্বরের পর থেকে ডলার ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

About Nasimul Islam

Check Also

রিজার্ভ নিয়ে বিশাল বড় সুসংবাদ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *