Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচনের দিনকে ঘিরে নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি

নির্বাচনের দিনকে ঘিরে নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর হরতাল-অবরোধ থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছে বিএনপি। বিকল্প কর্মসূচি হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ, সমাবেশ কিংবা নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন অবরোধের বিষয়ে দলীয় বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে দলটির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে নেতাদের আলোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আপাতত চলমান কর্মসূচিতে থাকবে না দলটি।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তবে তফসিল পেছানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় পার্টি। এরপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিলে আন্দোলনের একটা পর্ব শেষ হয়ে যাবে।

এরপর ৭ জানুয়ারি ভোটের দিনকে ঘিরে আন্দোলনের আরেক দফা শুরু হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই ভোটের দিন মাঝখানে বিক্ষোভ, মিছিল, অবস্থান কর্মসূচির মতো কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়ে সময়ে হরতাল দেওয়া হতে পারে। তবে কোনো কারণে পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে এলে দলটি হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে থাকবে বলে আলোচনা রয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে হরতাল কর্মসূচির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে ওই দিন ঢাকায় জেলা পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করার প্রস্তাব দেন কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

সাম্প্রতিক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছেন। হরতাল-অবরোধে জনগণের সমর্থন থাকলেও লাগাতার কর্মসূচি সবার মধ্যে একঘেয়েমিতা তৈরি করছে বলে মনে করছেন নেতারা। নেতাকর্মীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে শিথিলতা।

তা ছাড়া দীর্ঘদিন হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করা কঠিন।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীসহ ছোট দলগুলোর ছেড়ে দেওয়া আসনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে কোন্দল হবে। সে অবস্থায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির পরিবর্তে রাজনৈতিক মেরুকরণের দিকে নজর রেখে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করাই বেশি যুক্তিযুক্ত হবে।

বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, পুপুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছেন কয়েকজন নেতা। কেনো কোনো নেতা পুলিশের অনুমতি ছাড়াই নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের পক্ষে মত দেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী সপ্তাহব্যাপী অবরোধ চলবে। এরপর জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে সামনে রেখে নতুন কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা আলোচনা করছেন।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পরের দিন থেকেই হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোও আলাদাভাবে একই কর্মসূচি দিচ্ছে।

এর মধ্যে ছয় দফায় ১৫ দিনের অবরোধ ও দুই দফায় তিনদিনের হরতাল করেছে দলগুলো। সপ্তাহের দুটি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ছাড়াও তিন মঙ্গলবার কর্মসূচিতে বিরতি রয়েছে।

সরকারের পদত্যাগ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক দফা দাবির প্রতিবাদে সপ্তম দফায় আরও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে বিএনপি।

শুক্রবার ও শনিবার দুদিন বিরতি দিয়ে রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক, নৌপথ ও রেলপথ অবরোধ করবে দলটি।

ষষ্ঠ দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। নেতাদের নিয়ে বিএনপির কোনো অস্বস্তি নেই

দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে নানা প্রলোভন দিয়েও সরকার সফল হয়নি বলে মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তাই বিএনপির সাবেক নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করার চেষ্টা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য নেতা নির্বাচনে যাওয়ার আগ্রহ দেখাননি।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, সরকার ছোট দলগুলোকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত কয়েকটি দল ছাড়া অধিকাংশ দলই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যোগদানের বিষয়ে সাড়া দেয়নি। তাই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হতে পারে, যাতে সরকার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আরও কয়েকটি দলকে নির্বাচনে যুক্ত করতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে দেশে নির্বাচনের মেজাজ নেই। এটা স্পষ্ট যে এই নির্বাচনে কেউ আগ্রহী নয়। তা সত্ত্বেও জবরদস্তি ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে ছোট দলগুলোকে নির্বাচনের মাঠে টেনে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তারপরও সরকার সফল হয়নি।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতির মাঠে সব সময় কিছু অসাধু লোক থাকে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় যারা প্রতারণা করেছে তারা সফল হয়নি। নিকট অতীতের এই শিক্ষা সবার মাথায় রাখা উচিত।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *