Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ভোটের পরিস্থিতি নয়, যেসব বিষয় পর্যবেক্ষণে আসতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

ভোটের পরিস্থিতি নয়, যেসব বিষয় পর্যবেক্ষণে আসতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনী সহিংসতা পর্যবেক্ষণ করতে চায়, ভোটের পরিস্থিতি নয়। অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে পাঠানো এক সার্কুলারে এমনটাই জানিয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেতিবাচক মনোভাব আসলে তাদের প্রতিবেদনের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কমনওয়েলথসহ অন্য দেশের পর্যবেক্ষকদের মূল্যায়নের পরামর্শ তাদের।

বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের দৌড়ঝাঁপ ও বিভিন্ন হস্তক্ষেপমূলক আচরণ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। আবার, মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) দ্বারা সমর্থিত সিজিএস সহ কিছু এনজিও আমেরিকানদের সহযোগী হিসাবে কাজ করছে। এনইডি বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় সিআইএ নামে পরিচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল ৮ থেকে ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করে। ৪ দিনের অবস্থানকালে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রতিষ্ঠান এনডিআই ও আইআরআই-এর প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৫ অক্টোবর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৫টি সুপারিশ দেন তারা। যেখানে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কি না তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর জানাবেন।

এ প্রসঙ্গে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ২২ নভেম্বর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী সমাবেশে সক্রিয় রয়েছেন।

একই দিন আইআরআই ও এনডিআই এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, বাংলা‌দে‌শের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কারিগরি দল পাঠা‌তে চায় দুই সংস্থা। তবে নির্বাচনে ফলাফল সংক্রান্ত বিষয় পর্যবেক্ষণে নয় বরং নির্বাচনের আগের, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার পরিস্থিতি মূল্যায়নে আসবে দলটি। ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থানকালে তারা নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলের নিজেদের এবং একে অপরের সঙ্গে সহিংসতা, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি সহিংসতা, অনলাইনে হেনস্থার বিষয়গুলো এবং সেসব দমনে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করবে দলটি।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মার্কিন পর্যবেক্ষকরা সহিংসতার সম্ভাবনাকে অবমূল্যায়ন করছেন। মার্কিন গণতন্ত্রেরও বিভিন্ন দুর্বলতা রয়েছে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ২৬-৩০ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়। আমাদের এখানে ৮০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে অনেক অঞ্চলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যায়। বাংলাদেশে এক আসন থেকে ১০০ এর বেশি প্রার্থী রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পর্যবেক্ষকদের ভুল সংশোধনে রাজনীতিবিদদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মত দেন এই কূটনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুধু প্রতিবেদনের দিকে নজর দেওয়া উচিত নয়। কমনওয়েলথের সাথে আসা ১২-১৪টি পর্যবেক্ষক সংস্থার রিপোর্টেরও  মূল্য দিতে হবে।

আর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ডঃ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপী গগণতন্ত্রের সবক দিয়ে বেড়ানো যুক্তরাষ্ট্রে বিলিওনিয়ার না হলে আইন প্রণেতা হওয়া যায় না। তবে বাংলাদেশর রাজনৈতিকদলগুলোর দূরত্বের কারণে মার্কিনরা নাক গলানোর সুযোগ পায় বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশের মানুষ। বিদেশী প্রেসক্রিপশন কাজ করবে না।

About Nasimul Islam

Check Also

জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: বাহাউদ্দিন নাছিম

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ৫ আগস্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *