তাহসান জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে এই অভিনেতা ও শিল্পির সাথে দেখা যাচ্ছে আদিল হাজোসেন নোবেলকে। দুজনকে একই সাথে একটি ছবিতে দেখার পর অনেকটা অবাক হয়েছেন নেটগারিকরা তবে আরোও বেশি অবাক হয়েছেন নোবেলের ফিটনেস দেখার পর। কারণ সূত্রের খবরে জানা গেছে নোবেলের বর্তমান বয়স ৫৩ বছর।
এই ছবিটি দেখার পর তার ফিটনেস নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। কোনো কোনো ব্যক্তি বলেই বসেছেন এটি একটি বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানের অংশ, কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এটি জিম থেকে তোলা একটি ছবি। এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম যোগাযোগ করে তাহসানের সঙ্গে।
ছবির পেছনের গল্প শুরুর আগে কিছুটা হেসে নিলেন হাসলেন তাহসান। তিনি বলেন, ‘নোবেল ভাই আমাকে রীতিমতো বকাঝকা করেন। কারণ তিনি নিয়মিতভাবেই জিমে যান এবং নিজের ফিটনেস বজায় রাখেন। আমি মাঝখানে বেশ কিছুদিন এটা মিস করি। সেজন্য গতকাল (শনিবার) নোবেল আমার সাথে ছবিতোলার পর আমাকে বকা দিয়েই বললেন, ছবি তোলো, ছবি তুললাম, তারপর বলললেন পোস্ট করো। বকা খেয়েই ছবিটা পোস্ট করলাম।’
তাহসানের সঙ্গে নোবেলের বেশ ভালো সখ্য। তাহসানকে পছন্দও করেন। একই জিমে দুজনেই যান। তাহসানের গ্যাপ হলেও নোবেলের হয় না। যার ফলে নিয়মিত জিমে যাওয়ার চাপ দেন নোবেল। তাহসান কালের কণ্ঠকে বললেন, ‘আসলে মাঝেমধ্যে শুটিং থাকলে তো জিমে যাওয়া হয় না। এভাবে গ্যাপ হয়। অন্যদিকে নোবেল ভাই যত চাপই থাকুক, তিনি জিম মিস করবেন না। আসবেনই। আমাকেও তিনি তার মতো করতে চান। এজন্যই বললেন ছবি তুলে পোস্ট দাও এতে করে তোমার আগ্রহ বাড়বে, মানুষেরও আগ্রহ বাড়বে।’
বাংলাদেশের শোবিজে মডেল হিসেবে নিজেকে ‘আইকন’ প্রতিষ্ঠা করেছেন নোবেল। আর তাহসান অভিনয় শিল্পী ও গায়কের বাইরে এক গ্রহণযোগ্য ভিন্ন ইমেজ তৈরি করেছেন যা তাকে সহজেই সব শ্রেণির আড্ডায় সহজে এন্ট্রি দেয়। যার ফলে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ তাঁদের দিকে।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে রবি দুপুরে আলাপকালে তাহসান বলেন, ‘উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকারা স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য উৎসাহ দেন। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা হয়ে ওঠে না। আসলে আমাদেরও সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলার তাগিদ অনুভব করতে হবে। আমিও চেষ্টা করে যাব সাধারণ মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য উৎসাহী করে তলতে।’
তাহসান ইউনিলিভারে ২০০৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ২০০৬ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১০ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন মার্কেটিং এ গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
২০১০ সালের মে থেকে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বা ইউল্যাব-এ শিক্ষকতা করছেন। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তাহসান।
তিনি ছায়ানট থেকে ছয় বছর রবীন্দ্রসংগীত শিখেছেন। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ও আরো কয়েকজন যুবক মিলে গঠন করেন ব্যান্ডদল ব্ল্যাক, পরবর্তিতে তিনি ব্যন্ড দল থেকে আলাদা হয়ে নিজস্ব ধারার গানে সম্পৃক্ত হন। বিয়ের পর তাহসান, স্ত্রী মিথিলাকে নিয়ে বের করেন নিজস্ব এ্যালবাম। ২০১২ সালে তাহসান গঠন করেন তাহসান অ্যান্ড দ্য সুফিজ নামে নতুন একটি ব্যান্ড। বাংলামোটরে ‘কৃত্যদাসের আবাসে’ নামে তার নিজস্ব স্টুডিও রয়েছে।
তাহসান একজন জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী বটে। নাটোকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, আদিল হোসেন নোবেল একজন বাংলাদেশী মডেল। তিনি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ এন্টারপ্রাইজ বিজনেস অফিসার হিসেবে কাজ করেন। নোবেলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামের চকোরিয়ায়। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে ঢাকায় চলে আসেন। যেহেতু তিনি ছাত্রাবস্থায় কিছু মডেলিং করেছিলেন, সেহেতু আফজাল হোসেনের মাধ্যমে মডেলিং শিল্পে তার পরিচয় হয়।
নোবেল ১৯৯১ সালে ফ্যাশন শো এর মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার কিছু টিভি বিজ্ঞাপন হল স্প্রাইট, এইচআরসি টি, আজাদ বলপয়েন্ট পেন, আরসি কোলা, পাকিজা শাড়ি, কেয়া বিউটি সোপ, কেয়া লিপ জেল, এবং এশিয়ান পেইন্ট। নোবেল এবং মৌ টিভি মডেলিংয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। নোবেল তার মডেলিং ছাড়াও কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। তার প্রথম নাটক ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ যেটা ছিল দেশের প্রথম প্যাকেজ টিভি নাটক। নাটকটি ১৯৯৫ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়। তিনি কাজী আনোয়ার হোসেনের জনপ্রিয় সিক্রেট এজেন্ট মাসুদ রানার চরিত্রে অভিনয় করেন।