জাতীয় সংসদের হুইপ ও শেরপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আতিউর রহমানের মধ্যে আপত্তিকর ও অশ্লীল কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
গত (সোমবার) সন্ধ্যায় অডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফাঁস হওয়া ৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের অডিওটিতে মহিলার সাথে আগের ব্যক্তিগত সময় এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি অশ্লীল কথোপকথন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাদের দুজনকে অনেক হাসিমুখে কথা বলতে শোনা যায়। তারা একে অপরের সাথে একাকী সময় কাটানো সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে।
ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং শোনার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেই অডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে হুইপ আতিউর রহমানের সমালোচনা করছেন।
সূত্রের খবর, ওই মহিলা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। হুইপ আতিউর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের কথাবার্তায় এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগ কর্মী ও স্থানীয়দের দাবি, আতিউর রহমান সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে অসংখ্য যুবতীর সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হন। সে কারণে দেশের কোথাও মুখ দেখাতে পারছে না বাগমারাবাসী। এজন্য তারা হুইপ আতিউরের শাস্তি চান।
হুইপ আতিউরের ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আতিউর প্রতিদিন কিছু নারীর সঙ্গে ভিডিও কলে অশ্লীল কথা বলেন। অনেক নারী এসব ভিডিও করেছেন। যারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন এবং একান্তে কাটানোর মুহূর্তগুলো ভিডিও করে রেখেছেন, যা সামনে বিপদ হিসেবে দেখা দিতে পারে।
এদিকে নির্বাচনের প্রাক্কালে হুইপ আতিউরের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা দাবি করেন, আতিউরের নারী কেলেঙ্কারি নতুন নয়। তবে নির্বাচনের আগে তার কর্মকাণ্ড নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। তার অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ইতোমধ্যে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, জনৈক আতিউরের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে শেরপুরবাসীর কাছে আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ দেখানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি তার চাঁদাবাজি ও দখলদারিতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।
শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক বলেন, এটা সামাজিক অবক্ষয়। হুইপ আতিউরের এহেন অনৈতিক ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ লজ্জিত । যার কারণে শেরপুর আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট হয়েছে। আতিউর আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি আবার মনোনয়ন পেলে তার দুঃশাসন ও নানা কেলেঙ্কারির কারণে শেরপুর আওয়ামী লীগ চিরতরে শেষ হয়ে যাবে।
হুইপ আতিউর রহমানকে ফেসবুকে এক স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে আপত্তিকর-অশ্লীল অডিও ফাঁস করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অডিও রেকর্ড আমার নয়। কেউ আমার কথা এডিট করে আমার নামে কলঙ্ক ও বদনাম ছড়াচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে রিপোর্ট করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।