কক্সবাজারে ইসলামী ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিন কর্মকর্তা হলেন ইমাম হোসেন, আজিজ আহমেদ জাবেদ ও মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম। তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ তিন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে বৃহস্পতিবার দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদনসহ একটি চিঠি পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুনিরুল ইসলাম বলেন, মামলা হলে দুদক তদন্ত করবে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারণ ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ দুদকের তালিকাভুক্ত অপরাধ। আমি থানায় মামলা না করে তা দুদকের কক্সবাজার কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।
ব্যাংক, পুলিশ ও দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ নভেম্বর ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার এক গ্রাহক তাঁর হিসাবের স্থিতিতে গরমিল পাওয়ায় ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে যাচাই-বাছাই করে এর সত্যতা পান ব্যবস্থাপক। একইভাবে ১২ নভেম্বর অন্য এক গ্রাহক তাঁর হিসাবের স্থিতির ব্যাপারেও একই অভিযোগ করেন। সেটিও ব্যবস্থাপক নিজ উদ্যোগে যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পান।
এ পর্যন্ত তদন্তে ম্যানেজার বিভিন্ন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অননুমোদিতভাবে মোট ৫৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলনের প্রমাণ পেয়েছেন। তবে আসামি ইমাম হোসেন তার লিখিত জবানবন্দিতে ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। তার লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পারস্পরিক যোগসাজশে তিনি নিজেই ৩০ লাখ টাকা, আজিজ আহমেদ জাবেদ ৩০ লাখ ও মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম ৫ লাখ টাকা নেন। তবে আজিজ আহমেদ জাবেদ ও মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা যায়, ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখাকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রতারক চক্র কাজ করছে। বহিরাগত ছাড়াও ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান (দক্ষিণ) বরকত উল্লাহ বলেন, বিষয়টি ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না।