Tuesday , November 26 2024
Breaking News
Home / Entertainment / মান্নার মৃত্যুতে শাবনূর-অনিকের বিয়ে

মান্নার মৃত্যুতে শাবনূর-অনিকের বিয়ে

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বজলুর রাশেদ চৌধুরী ২০০৮ সালে নির্মাণ করেন বধূ তুমি কার চলচ্চিত্র। এতে নায়ক ছিলেন মান্না। কিন্তু ছবির কাজ শুরুর আগেই মান্না মারা গেলে রিয়াজ-শাবনূর ও নতুন ছেলে অনিককে নিয়ে ছবিটি তৈরি হয়। আর এই ছবিতে কাজ করতে গিয়েই বিয়ে করেন শাবনূর-অনিক। পরিচালকের মতে, মান্নার মর্মান্তিক মৃত্যু না হলে শাবনূর-অনিকের সম্পর্ক হতো না। সবই ঈশ্বরের ইচ্ছা। মান্না-শাবনূর-অনিক প্রসঙ্গ স্মরণ করে ২০০৮ সালের কথা বলেন বজলুর রাশেদ চৌধুরী। শাবনূরকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছি। ছবির নাম ‘বধূ তুমি কার’। ত্রিভুজ প্রেম ও পারিবারিক কলহের গল্পে নায়ক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন মান্না। ৩০ জানুয়ারি শুটিং শুরু হবে। কিন্তু আগের দিন থেকেই শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। ২৯শে জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে মান্না আমাকে ডেকে বললেন, বজলু ভাই, বৃষ্টি হচ্ছে, আপনি কি সকালে শুটিং করতে পারবেন? যদি না পারেন, রাতে প্যাক আপ করুন। নইলে সকালে সবাই আসবে, এতে কনভেনশনসহ বিভিন্ন খাতে আপনার কয়েক হাজার টাকা ক্ষতি হবে। বজলুর রাশেদ বলেন, মান্নাও যেহেতু প্রযোজক ছিলেন, সে সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকায় তিনি আমাকে এই পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু মান্নাকে বললাম, দেখ তোর প্রথম দিনের শুটিং কেমন করে প্যাক আপ করব। মান্না বলেন, শুটিংয়ের প্রথম দিনেই কুফা আটকে গেছে, শুটিং করবেন না, শিডিউল দিচ্ছি। যাই হোক, তার কথামতো আমি আমার ম্যানেজারকে বললাম শুটিং প্যাক আপ করতে। এর ঠিক ১৭ দিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি মান্নার মর্মান্তিক অকাল মৃত্যু ঘটে।

মান্নার মৃত্যুর পর তার জায়গায় নায়ক হিসেবে কাকে নেওয়া হবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছিলাম। সে সময় জনপ্রিয় জুটি ছিল শাবনূর-রিয়াজ। তাই সবার পরামর্শে মান্নার পরিবর্তে রিয়াজকে কাস্ট করলাম। আমরা যখন মান্নাকে কাস্ট করি, তখন মান্নার ছোট ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য অনেক নায়ক ছিলেন। কিন্তু রিয়াজের ছোট ভাই হওয়ার মতো কোনো নায়ক খুঁজে পেলাম না। তাই নতুন ছেলে খুঁজছিলাম। তখন বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান ভাই আমাকে একটি ছেলে দিয়ে বললেন, এই ছেলেটিকে দেখেছেন? ছেলেটির নাম অনিক। তাকে দেখে আমার ভালো লাগত। আমি শাবনূরের কাছে তার ছবি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তাকে দেখে শাবনূর নিচু হয়ে যায়। শাবনূর বলেন, তাকে দেখতে শিশুর মতো লাগছে, সে আমার সঙ্গে একমত হবে না। আমি বললাম, গল্পটা এমন, যাতে তাকে না মানায় এবং দর্শক তাকে গ্রহণ না করে এবং আমি শেষ পর্যন্ত গল্পে দেখাব যে আপনার মধ্যে বিয়ে হবে না। কথাটা শুনে শাবনূর বললেন, ঠিক আছে, নিতে পারেন। বাস্তবতা হলো, পর্দায় নায়িকা ও স্ত্রী হতে পছন্দ না করা ছেলেটির সঙ্গে অভিনয় করতে চাননি শাবনূর, কিন্তু নিয়তির অদম্য নিয়মে তারা প্রেমে পড়েন এবং বাস্তব জীবনে বিয়ে করেন। বধূ তুমি কার ছিল অনিকের জীবনের প্রথম ও শেষ ছবি। তাদের বয়সের পার্থক্য ছিল ১২/১৩ বছরের মতো। মানে শাবনূরের খুব ছোট অনিক। শাবনূর আমাকে অনেক সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন বলে এটা আমার কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন। একদিন আমার এক প্রোডাকশন ম্যানেজার এসে আমাকে বললেন, স্যার আপনার ছবির নায়ক অনিককে হোটেল সোনারগাঁওয়ে শাবনূরের সঙ্গে দেখেছি। আমি বললাম ও শাবনূরের চেয়ে অনেক জুনিয়র, হয়তো কোনো কারণে ওরা হোটেলে গেছে, কি হয়েছে। আমি আসলে ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছি। কিন্তু একসময় তাদের সম্পর্কের কথা জানতে পারি। ২০১২ সালের দিকে দেশের জনপ্রিয় শীর্ষ পত্রিকা ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এর সিনিয়র বিনোদন সাংবাদিক আলাউদ্দিন মজিদ ভাই আমাকে ফোন করে বললেন, বজলু ভাই, আপনার কিছু জানার আছে, আপনি আসল তথ্য দিতে পারেন, আমি বললাম, জি ড. মজিদ ভাই বললেন, শাবনূর বিয়ে করেছেন আপনার ‘বধূ তুমি কার’ ছবির নায়ক অনিকের সঙ্গে। এই বিয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে একটা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ করতে পারব। আশ্চর্যজনকভাবে শাবনূর-অনিকের প্রেমের বিয়ের কথা প্রথম জানতে পারি মজিদ ভাইয়ের কাছ থেকে। আর যখন জানতে পারলাম শাবনূর-অনিক বাবা-মা হওয়ার পথে। যাই হোক না কেন, আমি আবারও একই কথা বলবো যে নিয়তির লেখাকে খণ্ডন করা যাবে না। মান্না না মারা গেলে এই ছবিতে অনিককে দেখা যেত না, শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্কও থাকত না। শেষ কথা শাবনূর-অনিকের প্রেম-বিয়ে হয়েছিল মান্নার মৃত্যুর পর।

About Zahid Hasan

Check Also

শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরও এক আপনজনকে হারালেন পরীমণি

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণির ক্যারিয়ারের প্রথম ছবি ভালোবাসা সীমাহীন-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল আর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *