Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / রোববার থেকে আসছে বিএনপির নতুন কর্মসূচি

রোববার থেকে আসছে বিএনপির নতুন কর্মসূচি

একযোগে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ফলে বিএনপি ও এর শরিকরা দেশব্যাপী সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ বাড়িয়ে চলেছে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল শুক্রবার ও পরের দিন শনিবার বাদে আগামী রোববার থেকে আবারও লাগাতার অবরোধের কর্মসূচি আসতে পারে। চলমান অবরোধ কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য দলের হাইকমান্ডকে প্রস্তাব দিয়েছেন স্থায়ী কমিটিসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপতের শরিকরা এরই মধ্যে বিএনপির কাছে এমন প্রস্তাব দিয়েছে। আরেকটি ধর্মঘটও বিবেচনাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে একদলীয় আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে, অবরোধ আরও বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে প্রথম পর্যায়ের চলমান অবরোধ কর্মসূচি শেষে ঘোষণা করা হতে পারে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী ৭২ ঘণ্টার টানা অবরোধ কর্মসূচি আজ বৃহস্পতিবার শেষ হবে।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিএনপির গণসমাবেশ অকালে শেষ হয়। গ্রুপটি দাবি করেছে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণের কারণে শান্তিপূর্ণ সমাবেশটি শেষ করতে হয়েছিল এবং এটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। এর প্রতিবাদে রোববার সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছে দলটি। হরতাল কর্মসূচির পর মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিএনপির নয়াপল্টনের গণসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এদিকে বিএনপি তাদের চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে। দলটির দাবি, জনগণের সমর্থনে দীর্ঘদিন পর নজিরবিহীন হরতাল হয়েছে। এ কারণে সরকারের তৎপরতা সত্ত্বেও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ওই সড়কে চলাচল করেনি।ঢাকার ভেতরেও সাধারণ মানুষ সরকারের প্রতি অনাস্থা দিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না। এ বিষয়টি বিএনপিকে দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মসূচিতে যেতে উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিস্তারিত ঘোষণার আগে চলমান আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছাতে চায় দলটির হাইকমান্ড। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম ধাপের অবরোধের পর আগামী সপ্তাহজুড়ে দেশব্যাপী আরেকটি লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি হতে পারে। আগামী সপ্তাহেও অবরোধ চলতে পারে। দলের কয়েকজন নেতা বলছেন, চলমান কর্মসূচিতে যে সাড়া পাচ্ছেন তাতে শিগগিরই আন্দোলনের ফল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা। জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের অবরোধ কর্মসূচি আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। এ কারণে ঢাকাসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়াতে এবং কোনো ধরনের শোডাউন ছাড়াই আগামী দিনের কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেপ্তারের পরিপ্রেক্ষিতে দলের হাইকমান্ড এখন পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। আন্দোলনের ফলে শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলেও চলমান আন্দোলনে কোনো মন্থরতা থাকবে না বলে দাবি বিএনপি নেতাদের।

এদিকে মহাসমাবেশকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে মামলা ও গ্রেফতার অভিযান চলমান থাকায় বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না, তবে তারা অভ্যন্তরীণভাবে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা হয়েছে। গত সোমবার বিএনপির গণসমাবেশে হামলার জন্য সরকার ও পুলিশকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্রসহ ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশের দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়েছে দলটি। এ ছাড়া সহিংসতার ঘটনায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিক্রিয়াকে আন্দোলনের পথে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি।

এদিকে, চলমান অবরোধ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি জনগণ তাদের চূড়ান্ত অনাস্থা প্রকাশ করেছে, দাবি করেছে সম্মিলিত আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক কালবেলাকে বলেন, এই অবরোধের মধ্য দিয়ে সারা দেশের মানুষ আবারও সরকারের প্রতি তাদের চূড়ান্ত অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের একতরফা নির্বাচনী প্রচারণাকে তারা মেনে নিচ্ছেন না, তেমনি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে দুর্বিষহ জীবনযাপনও মেনে নিতে পারছেন না। জনগণের এই সমর্থন না থাকলে অবরোধ কর্মসূচি এতটা সফল হতো না। তাই এটি সরকারের জন্যও একটি বড় রাজনৈতিক বার্তা।

আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনে আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়বে এবং সরকারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে পারব।

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার ও শনিবার বড় কোনো কর্মসূচি সম্ভবত থাকবে না। তবে দাবি আদায়ে দীর্ঘায়িত কর্মসূচির দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করছি।

About Nasimul Islam

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *