Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / Politics / মাগুরা-১ আসনে প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, আওয়ামী লীগের আগ্রহ কেমন

মাগুরা-১ আসনে প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, আওয়ামী লীগের আগ্রহ কেমন

মাগুরা-১ আসনে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের প্রার্থী হওয়ার খবর নিয়ে ভাবছে না স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি সাইফুজ্জামান শিখরই মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবেন বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে সাইফুজ্জামান শিখরের তৎপরতা দৃশ্যমান হলেও এখন পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা দেখা যায়নি।

২০১৮ সালে মাগুরা সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক এমপি প্রয়াত আসাদুজ্জামানের ছেলে সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুজ্জামান শিখর।

৯০-পরবর্তী সংসদীয় ব্যবস্থা চালুর পর ১৯৯১ সালে মাত্র একবার এই আসনে জয়লাভ করে বিএনপি। এছাড়া এ আসনে প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে একক দলীয় প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাইফুজ্জামান শিখর। দলের মধ্যে কোন্দল থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাই তার সঙ্গে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাকিব আল হাসানের নাম গণমাধ্যমে এলেও এলাকায় এখনো তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। সাকিব আল হাসানের কোনো নির্বাচনী তৎপরতা নেই।

এ প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসানের বাবা মাশরুর রেজা কুটিল বলেন, আমি রাজনীতিতে আগ্রহী নই। শাকিবের সঙ্গে এ নিয়ে বেশি কথা বলি না।

নিজনান্দুয়ালী এলাকার আওয়ামী লীগ দলীয় সমর্থক আমির মোল্লা বলেন, সাকিব আল হাসান মাগুরার সন্তান হলেও মাগুরার কোনো অনুষ্ঠানে তাকে দেখিনি, রাজনীতি তো দূরের কথা। দল এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে বলে মনে করি না।

এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সরকারি দলের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তার দাপটের কারণে অনেক পুরনো নেতা-কর্মী এখন দলের বাইরে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী রয়েছেন, যারা দলের হাইকমান্ডের কাছে লবিং এবং তৃণমূল পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান এটিএম আবদুল ওয়াহাব, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা আমীর ওসমান রানা। তবে এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান এমপি সাইফুজ্জামান শিখর।

শিখর অনুসারীদের মতে, সাইফুজ্জামান শিখর মাগুরায় একটি মেডিকেল কলেজ, নির্মাণাধীন আইটি পার্ক, অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম ও এর সৌন্দর্যবর্ধন, আধুনিক জিমনেসিয়াম, নবগঙ্গা সেতু, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চার লেনসহ জেলায় উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এমপি হওয়ার পর পৌর এলাকার রাস্তা।

সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, গত ১৫ বছর ধরে মাগুরা গ্রামের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। গত নির্বাচনে জয়ের পর সেই প্রবণতা বেড়েছে। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে আমার পরিবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করে আসছে। তাই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে এ আসন থেকে আবারো বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো বলে মনে করি।

অন্যদিকে বিএনপি সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মিছিল-মিটিং করলেও তাদের কোনো নেতার মধ্যে নির্বাচনী তৎপরতা দেখা যায়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দেন তারা। বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমদ, বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব কিশোর আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইকবাল আক্তার খান কাফুরও বিএনপি থেকে এ আসনে প্রার্থী। তিনি 2018 সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত হন এবং শিখরের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। তবে নির্বাচন প্রশ্নে কেন্দ্রের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় সবাই।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব কিশোর বলেন, দলের দুঃসময়ে যিনি মাঠে থেকেছেন দল তাকে অবশ্যই মনোনয়ন দেবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি।

মাগুরা জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক প্রয়াত কেন্দ্রীয় জাপা নেতা হাসান সিরাজ সুজার ছেলে সেলিনা হাসান জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি। মিটিং।

এদিকে মাগুরা-১ আসনে কেন্দ্রীয় সদস্য জাহিদুল আলমকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জেলা জাসদ। তিনি ইতিমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে জাসদকে সংগঠিত করেছেন।

মাওলানা নাজিরুল ইসলাম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মাগুরা-১ আসনে প্রার্থী হতে পারেন। তবে মাগুরা-১ আসনে জামায়াত প্রার্থীদের তৎপরতা দেখা যায়নি।

সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা নিশ্চিত নন। অধিকাংশ মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়।

ইসলামপুর পাড়ার ব্যবসায়ী প্রাণকৃষ্ণ বলেন, আমরা দেশে শান্তি চাই। পরিবেশ ভালো থাকুক।

সদর উপজেলার হাজরাপুর গ্রামের কৃষক হানিফ মিয়া বলেন, আমরা ভোট চাই। কে জিতেছে বা হেরেছে তাতে কিছু যায় আসে না। সবাই ভোট দিতে পারেন।

মাগুরা সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, একটি মিউনিক নিয়ে গঠিত মাগুরা-১ আসন।

About Zahid Hasan

Check Also

‘আ.লীগ রঙ দেখছে, কিন্তু রঙের ডিব্বা দেখেনি’ দল যে সিদ্ধান্ত নেবে মাথা পেতে নেব

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *