প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে। বিভিন্ন ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিলেও তারা বিএনপির সমান নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, দুই দল, পাঁচ দল, দশ দল, ছোট দল, বাংলাদেশের বিভিন্ন দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, তারা প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সমান নয়। এটা আমরা অস্বীকার করি না এবং কেউ অস্বীকারও করবে না। যদি সেই দলটি অংশগ্রহণ না করে, তবে একটি অনিশ্চয়তা বা একটি শঙ্কা, একটি অসম্পূর্ণতা, এতে কোন স/ন্দেহ নেই। হাবিবুল আউয়াল মনে করেন, কোনো ধরনের সং/ঘর্ষ বা স/হিংসতা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হলে তারা ‘খুশি’ হবেন, কিন্তু গণতান্ত্রিক চেতনার দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচন ‘অসম্পূর্ণ’ থেকে যাবে।
সাক্ষাৎকারে সিইসি বলেন, নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসনে আগাম রদবদলের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রশাসনে রদবদল হলে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর প্রশাসনে রদবদলের কথা বললে তা বিবেচনা করবে কমিশন। তিনি বলেন, আমরা এটে-সেটা পরিবর্তন করেছি, যা কখনও হয়নি। তারপরও তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তাই এটা খুব একটা অর্থবহ প্রক্রিয়া হবে বলে আমি মনে করি না।
সাড়া পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন : সিইসি বলেন, ইভিএম নিয়ে সংলাপ ও আলোচনার জন্য কমিশন বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে একাধিক চিঠি দিয়েছে, কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি। তিনি বলেন, দুইবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমি শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে (বিএনপি মহাসচিব) নয়, তার সহানুভূতিশীল দলগুলোর প্রধানদেরও একটি ব্যক্তিগত ডিও লেটার লিখেছিলাম, যারা নির্বাচন বয়কট করছে। নির্বাচন কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।
নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে : সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, আরপিওতে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এগোচ্ছি। ডানে বামে তাকাচ্ছি না। আমাদের প্রস্তুতি আপ-টু-ডেট। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কমিশন। হাবিবুল আউয়াল বলেন, একটি সংকট, অবিশ্বাস নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। দেশ যে খুব সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই- তা বলা যাবে না। কিন্তু আমরা এখনও আশা করি-মাঝে মাঝে-নির্বাচনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সুশীল সমাজ একটু বেশি সক্রিয় হবে।
এটা কি অংশগ্রহণমূলক হবে? : প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অংশগ্রহণের এখন দুটি অর্থ। একটি হলো, জনগণ ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়। আরেকটি বক্তব্য হলো সব দল অংশগ্রহণ করেছে। আর সেক্ষেত্রে ইংরেজিতে বলা হয় ‘ইনক্লুসিভ’ বা অন্তর্ভুক্তিমূলক। এ ক্ষেত্রে সমঝোতা ও রাজনৈতিক সংলাপ খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে? : প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বারবার দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে কি হবে না, এটা রাজনৈতিক সাহিত্য বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রের কথা। আমরা সে বিষয়ে মন্তব্য করব না।