Sunday , November 10 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সরকার বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, গ্রেফতার রায় আতঙ্কে বিএনপি

সরকার বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, গ্রেফতার রায় আতঙ্কে বিএনপি

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও মামলা-মোকদ্দমার আতঙ্কে বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতার মিথ্যা মামলায় সাজা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। এ বিষয়ে দলীয় সূত্র জানায়, পুরনো, নিষ্ক্রিয় ও স্থগিত মামলাগুলোকে সক্রিয় করে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নাশকতার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করছে পুলিশ। দলের নীতিনির্ধারকদের মতে, সরকারের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ট্রাম্প-আপ অভিযোগে শীর্ষ বিরোধী নেতাদের অযোগ্য ঘোষণা এবং আটক করা, যাতে তাদের কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে। অর্থাৎ সরকারের একটাই উদ্দেশ্য বিএনপিকে নেতৃত্বহীন করা এবং তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন  বলেন, বিএনপিকে নেতৃত্বহীন করতে সরকারের এমন মহাপরিকল্পনা আগে থেকেই রয়েছে। জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় আদালতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক রায় ও সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। পুরাতন, স্থগিত ও মৃত মামলা সক্রিয় করা হয়েছে এবং দ্রুত রায় ও সাজা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেওয়া সাজা বহাল রাখার ঘোষণা সরকারের এই পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের অংশ। কিন্তু এবার কোনো কাজে আসবে না। কারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই সরকারের পতন অনিবার্য।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের মামলার জালে পুরো বিএনপিই ফেঁসে গেছে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূলের এমন কোনো সক্রিয় নেতা নেই যার নামে একাধিক মামলা নেই। মামলা থেকে কেউ রেহাই পায়নি। বিএনপিসহ সমমনা জোট সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের চূড়ান্ত মূক মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত এমন সময়ে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ফলে সরকার উৎখাতের আন্দোলনে থাকা দলটিতে নতুন করে গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দলের গুরুত্বপূর্ণ সক্রিয় নেতাদের পুরনো মামলায় ‘টার্গেট’ করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাদের কারারুদ্ধ করতে চায় সরকার। বিচারে আকস্মিক গতি তারই প্রতিফলন। এ জন্য তারা গ্রেফতারের আশঙ্কা করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪১ হাজার ৭২২। আর অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। মোট মামলার মধ্যে ২ হাজার ৮৩০টির বেশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়েছে। এর মধ্যে গায়েবি মামলা রয়েছে শতাধিক।

বিএনপির কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ওয়ান-ইলেভেনের সরকার কর্তৃক ২০১৩-১৫ সালে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। কিছু মামলা শেষের দিকে। রাজনৈতিক এসব মামলায় বিএনপি মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, মধ্যম সারির ও তরুণ নেতারা আসামি। সূত্র জানায়, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির সিনিয়রদের মামলার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি হতে চলেছে। বিশেষ করে ২০১৩ এবং ১৪ সালের মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য দিনে ১০ থেকে ১৫ জন সাক্ষী হাজির করে মামলাগুলো রায়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় গত ২ আগস্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা একটি মামলায় সম্প্রতি বিচারিক আদালতে বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। পৃথক মামলায় দলের আরেক নেতা আমানুল্লাহ আমানের ১৩ বছরের সাজা বহাল রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার নির্বাচনি মাঠ খালি রাখতেই এলাকায় জনপ্রিয় নেতাদের সাজানো মামলার কারাদন্ড দিয়ে জেলে ঢোকাচ্ছে। এসব রায় সরকারের ফরমায়েশি।

এ প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, হঠাৎ করেই সরকার বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। গত এক বছর ধরে আমরা জনগণকে নিয়ে রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। উল্টো সরকার শুধু বিএনপিকে উসকানি দিচ্ছে না, মিথ্যা, অযৌক্তিক, বানোয়াট, কাল্পনিক ও অদৃশ্য মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমন করেছে।

About Nasimul Islam

Check Also

শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ট্রাম্পের নামে উক্তি ভাইরাল

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি উক্তি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও শেখ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *