বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলাধীন শ্যামগাঁতী ইউনিয়ন এলাকার মথুরাপুর নামক গ্রামের একটি গর্ত থেকে ধোয়া বের হওয়ার ঘটনা ঘটছে। ঐ ধোয়া সাধারন কাঠ পো’ড়া ধোয়ার মতো নয়, বরং ধোয়া দুর্গন্ধযুক্ত। এই ঘটনার পর মানুষের মাঝে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার পর গ্রামবাসীদের মাঝে শ’/ঙ্কিত অবস্থা বিরাজ করছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে কোনো রকম আ’ত/’ঙ্কিত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানে দেখে এসে কৌতূহলী মানুষ নানা ধরনের মন্তব্য করছেন।
শ্যামগাঁতী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন যাবৎ গ্রামে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া একটি রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় পায়ে তাপ অনুভব করছেন। মাটির নিচে ঠিক কী কারনে এমন গরম অনুভব হচ্ছে, তা দেখার জন্য তারা ৪ ইঞ্চির মতো গর্ত খুঁড়লে সেখান থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। খবরটি ঐ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে দূরদুরান্তে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেটা দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন দেখতে আসেন। অনেকে এটাকে ভূ’ত-জ্বীনের কাজ ভেবে প্রচার চালান।
গ্রামের কয়েকজন প্রবীণ জানান, ওই স্থানের আশপাশে পুকুরপাড় ও নিচু এলাকায় পুরাতন কয়েকটি বট-পাকুড় গাছ ছিল। গত ৪-৫ বছর ধরে গ্রামবাসীরা ওই স্থানের পাশ দিয়ে সরু রাস্তায় চলাচল করে। দিনে ধোঁয়া কম হলেও রাত বেশি হয়। গ্রামবাসীরা ওই গর্তে গ্যাস বা দাহ্য পদার্থ থাকার কথা ভেবে আ’/ত’ঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে ওই ধোঁয়ায় আ’গু/ন না জ্বলায় ভ’/য় কে’টে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, ওই স্থানে আগে গাছ ছিল। পরে কেটে বিদ্যালয় ভবন করা হয়েছে। বর্তমানে আর ধোঁয়া নেই। আ’ত’/ঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি আরও জানান, ভৌগোলিক বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাটির নিচে থাকা উদ্ভিদের অংশগুলো থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। এরপর কোনও কারণে সেখান থেকে ধোঁয়া বের হয়। সেখানেও মাটির নিচে কিছু মিথেন জাতীয় গ্যাস জমা হয়েছিল। এরপর গ্রামবাসী নানা প্রচারণা চালায়।
ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান যিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, মাটির নিচে অনেক আগে যে সমস্ত গাছ পড়ে রয়েছে সেগুলো পচনের মাধ্যমে মিথেন গ্যাস সৃষ্টি হয়। ঐ সকল গাছের পচন অংশ যদি দীর্ঘদিন ধরে আদ্রতার সংস্পর্শে আসে তাহলে সেখানে মিথেন গ্যাস তৈরী হয়। যেটা মাটি উষ্ণ করে ফেলতে পারে। অনেক সময় অধিক তাপ সৃষ্টি হলে আ/গু’নও জ্বলে উঠতে পারে। তবে যে ধোঁয়া বের হচ্ছে সেটা অপরিপক্ক মিথেন গ্যাস। এই গ্যাস কোনো ক্ষতির কারন হতে পারেন।