গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার পরিবর্তন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিশ্বব্যাপী আলোচনা শুরু হয়েছে। সবাই এই সরকারের পদত্যাগের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আজ বিডিআর হ”ত্যা মামলার বিচার হলে সরকারের অনেক নেতার ফাঁসি হবে। তাই এই সরকার নিজেদের ক্ষমতা জোরদার করার চেষ্টা করছে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী ও ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থী নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ সংহতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ভিপি নূর বলেন, আমরা এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করছি না, মাঠে আন্দোলন করছি না, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে রাজনীতির মাঠে লড়াই করছি।
সমাবেশে ছাত্র পরিষদের দাবি জানিয়ে নূর বলেন, এই সরকার দেশকে মেধাশূন্য করতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পরিষদ নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে দেশের কোনো সরকার ছাত্র ইউনিয়ন চালু করেনি। যে কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশের রাজনীতিতে আগ্রহী নয়। আজ যারা ন্যায্য আন্দোলন করেন তাদের মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়। ছাত্রলীগ একটি দানব সংগঠন। শিক্ষার্থীরা মানুষ হয়ে ছাত্রলীগে প্রবেশ করে এবং দানব হয়ে বের হয়। ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার আলামত থাকলেও তারা কেউই চুপ থাকেননি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো চুপ থাকেনি।
তিনি বলেন, আজ পত্রিকার কলামে দেখছি দেশের রিজার্ভ ৮-১০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। দুই বছর আগেও দেশের রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছিল। সেখান থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলার চলে গেছে। রিজার্ভ সংকটের কারণে দুই মাস পর আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। তখন চাল-ডাল আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। কি খাবেন সবাই, সেটা এখন থেকেই ভেবে রাখেন।
পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে নূর বলেন, শাহবাগ থানার এডিসি হারুন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যা”তন করেছে। ছাত্রদের ওপর হাম”লার জন্য তাকে বারবার বারবার পদোন্নতিও দেওয়া হয়েছিল। পরে ছাত্রলীগ নেতাদের গায়ে হাত তোলায় তাকে বদলি করা হয়। তাই পুলিশ ভাইদের বলব, ক্ষমতার পরিবর্তন হলে এই সরকার আপনাদের বাঁচাতে পারবে না। বিদেশে এমপি-মন্ত্রীদের কোটি কোটি টাকা, বাড়ি-গাড়ি রয়েছে। তারা পালিয়ে যাবে, আপনি যেতে পারবেন না। তাই এখন অন্তত সাধারণ মানুষের কথা ভাবুন। আপনার নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে আপনাকে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
বুয়েটের আবরার ফাহাদ হ”ত্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হ”ত্যার পর উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিতে দেননি। ছাত্রলীগ নেতাদের বাঁচাতে ফুটেজ আড়াল করার চেষ্টা করেন তিনি। এরপর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে শিক্ষার্থীরা ভয়ে মিছিল করতে পারেনি। আমরা মিছিল নিয়ে বুয়েটে গেলে বুয়েটের ছাত্ররাও আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের কারণে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হয়। তা না হলে এ মামলার কোনো বিচার হতো না, অপরা’ধীরা সহজেই পার পেয়ে যেত।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, লেখক ও কলামিস্ট লেখক রাহা, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্রলীগ (জেএসডি) সভাপতি তৌফিকুজ্জামান পিরাচা, ভাসানী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আহমেদ শাকিল, ছাত্র জমিয়তের সভাপতি নিজামউদ্দিন আল আদনান, কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আসাদ বিন রনি, সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, ঢাকা কলেজের সাধারণ সম্পাদক নজরুল করিম সোহাগ, কবি নজরুল সরকারি কলেজের সাধারণ সম্পাদক মো. সালমান প্রমুখ।