প্রেমিকাকে বিয়ের দাবিতে ঢাকার সাভারে বিশ টাকার স্ট্যাম্পে সুইসাইড (আত্মহত্যা) নোট লিখে থানায় হাজির হয়েছেন মো. শিমুল হাসান নামে এক যুবক।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতাসুতি গ্রামের ওই যুবক একটি সুইসাইড নোট নিয়ে থানায় হাজির হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার এসআই নোমান ছিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, ছেলেটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পারি সে একটি মেয়েকে পছন্দ করে এবং তাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু তার পরিবার এখনই বিয়েতে রাজি নয়। এরই জের ধরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্ট্যাম্পে সুইসাইড নোট লিখে ছেলেটি থানায় হাজির হয়।
তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা ওই যুবককে আত্মহনন করতে বাধা দেন। যুবক আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতাসুতি গ্রামের বাসিন্দা ও আব্দুল মান্নান ডিগ্রি কলেজের ছাত্র।
এসআই নোমান সিদ্দিক জানান, ছেলেটি বলেছে, প্রেমিকাকে নিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে টানাপোড়েনের কারণে সে এমন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তার মৃত্যুর পর পরিবার যাতে আইনি জটিলতার সম্মুখীন না হয় সেজন্য থানায় এসেছে।
সুইসাইড নোটে ওই যুবক লেখেন, ‘আমি মো. শিমুল হাসান, বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমার বয়স ১৮। অতএব আমি প্রাপ্তবয়স্ক। আমি আমার বুঝ বুঝতে শিখেছি। অতএব, আমি শিমুল হাসান সজ্ঞানে চিন্তাভাবনা করিয়া এই মর্মে অঙ্গীকার করিতেছি যে, ভবিষ্যতে আমার যদি কোনো প্রকার ক্ষতি হয় বা আমি মারা যাই এর জন্য এই পৃথিবীর কেউ দায়ী থাকবে না। আমার মৃত্যুর জন্য কেবল আমি নিজেই দায়ী। আমার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর আইন যাতে আমার পরিবারের অন্য কারও ওপর কোনো প্রকার হয়রানি করতে না পারে।’
এসআই নোমান জানান, ওই যুবক একটি সুইসাইড নোট লিখে তা জমা দিতে রাতে ডিউটি অফিসারের কক্ষে আসেন। পরে বিষয়টি আমার নজরে এলে তার সঙ্গে কথা বলি। এক পর্যায়ে আমি তার পরিবারের কাছে নিয়ে যাই। জানতে পারলাম ছেলেটির পরিবার খুবই দরিদ্র। তার বাবা একজন কৃষক। ছেলের বিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। তাছাড়া তার এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। আরও কিছুটা প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তারপর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবেন। এতেই ক্ষোভে-দুঃখে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ছেলেটি।
তিনি বলেন, ছেলের বাবা-মা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। ছেলেটিকে তার পরিবারকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন সবকিছু স্বাভাবিক।