সম্প্রতি সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগকে কেন্দ্র করে তারকাদের মধ্যে মারামারি বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় বিনোদন মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে।তাদের মধ্যে এমন কর্মকাণ্ড দেখে অনেকেই হতবাক হয়েছেন। তারকাদের এমনকাণ্ডে রীতি মতো সমালোচনার ঝড় ওঠে।বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখিকা মিলি সুলতানা হুবহু পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো।
আশির দশকে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে রুপালী পর্দার ঝলমলে তারকাদের অংশগ্রহনে একটা প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হয়েছিল।ভীষণ রকমের আকর্ষণীয় ছিল সেই ফুটবল ম্যাচ। ববিতা জাফর ইকবাল রাজ্জাক বুলবুল আহমেদ অঞ্জনা মান্না চম্পা রানী জিনাত নূতন রোজিনা দিতি দিলারা ইলিয়াস কাঞ্চন সুচরিতা জাভেদ রাজিব নূতন রোজি সামাদরা সেই ফুটবল ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় মানুষ তারকার স্বচক্ষে দেখার জন্য টিকিট কেটে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিল। স্টেডিয়ামের একটা সিটও খালি ছিলোনা। তারকারা যখন স্টেডিয়ামের কিনারা ঘেঁষে মাঠ প্রদক্ষিণ করছিল তখন দর্শকদের হুইসেল চিৎকার আর হাততালির শব্দে অদ্ভুত মোহময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। বিশেষ করে ববিতা জাফর ইকবাল যখন একসাথে হাঁটছিলেন আর মৃদুস্বরে পরস্পরের সাথে কথাবার্তা বলছিলেন তখন দর্শকও তাঁদের জন্য উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছিল। জাফর ইকবালের চোখে ছিল সানগ্লাস। ববিতার পরনে ছিল লাল সিল্কের শাড়ি। ববিতার লাল লিপস্টিক মাখা ঠোঁট নড়া আর কাজল মাখা ডাগর ডাগর চোখের অপরুপ অভিব্যক্তি দেখে বোঝা যাচ্ছিল তারা দুজনের সান্নিধ্য বেশ উপভোগ করছিলেন। চম্পা হাঁটছিলেন মান্নার কাঁধে হাত রেখে। রসিক দর্শক মান্না চম্পার হাঁটার ভঙ্গি দেখে মুহুর্তেই লাইভ ক্যাপশন বানিয়ে ফেললো, “লও যাইগা লও যাইগা”!!
তাঁরাও সেলিব্রেটি ছিল আর আজকের শরীফুল রাজের মত গোবরের পোকারাও সেলিব্রেটি দাবী করছে নিজেদের। কে সেলিব্রেটি আর কে সেলিব্রেটি নয় সেদিকে না যাই। রাজরীপাকে আমি চিনিনা। কিন্তু তার প্রদর্শিত মিডল ফিঙ্গারকে আমি চিনেছি। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাঁর গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে সাফ জায়গায় দাঁড়িয়ে এক প্রতিবাদী নারী ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে মিডল ফিঙ্গার প্রদর্শন করেছিল। ট্রাম্পের নজরে পড়েছিল সেই মিডল ফিঙ্গার। কিন্তু এ নিয়ে ট্রাম্প ও তাঁর নিরাপত্তা বাহিনী কোনো প্রতিক্রিয়া করেননি। এমনকি সিকিউরিটি ফোর্স সেই নারীকে রাস্তা থেকে একচুলও সরিয়ে দেয়নি। কারণ এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। রাজরীপার মিডল ফিঙ্গার নিয়ে ব্যাপক ট্রল তর্কবিতর্ক হচ্ছে। তবে রাজরীপার মধ্যাঙ্গুলি কাদের পৌরুষে আঘাত করেছে তা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছেনা। পরীমণির প্রাক্তন শরীফুল রাজ কত বড়মাপের টাউট বাটপার বর্বর সেটা আগেই উন্মোচিত হয়েছিল। যখন পরীমণিকে ধোঁকা দিচ্ছিলো তানজিন তিশা সুনেরাহদের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে। শুনেছিলাম শরীফুল রাজ একজীবনে মোটর গ্যারেজে মেকানিকের কাজ করত। রাজ যখন গাড়ির নিচে শুয়ে পড়ে গাড়ি মেরামত করত, তখন প্রায়ই নাকি তার কাছে হরতালে ভাড়া খেটে গাড়ির টায়ার পোড়ানোর প্রস্তাব আসতো। মবিলের দাগ পড়া ময়লা প্যান্ট শার্ট পরে রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতালে গাড়ির টায়ার পোড়াতো শরীফুল রাজ। এই বখাটেকে জাতে উঠাতে চেয়েছিল পরীমণি। যার নতিজা অবশ্য পরীমণিকে দেখতে হয়েছে।
সেলিব্রেটি ক্রিকেট লীগে খেলার নামে মারামারি হানাহানি করে শরীফুল রাজ প্রমাণ করেছে সে একটা উৎকৃষ্ট মাতাল গুন্ডা। নারীর গায়ে হাত তুলে বিন্দুমাত্র রিগ্রেট করছেনা রাজ গুন্ডা। হাওয়া থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে মোটর গ্যারেজ শ্রমিক রাজ নাকি পরীমণির সাথেও গায়ে হাত তোলা নিয়ে তাফালিং করতে গিয়েছিল। কিন্তু পরীমণি তার হাত মুচড়ে ধরে তার পশ্চাদ্দেশে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তাই দ্বিতীয়বার পরীর সাথে গুন্ডাগার্দি মাওয়ালীগিরি করার চান্স পায়নি। রাজরীপার মিডল ফিঙ্গার নিয়ে যারা ফেসবুক উত্তপ্ত করছে তাদের বুঝা উচিত বখাটে রাজ কোনোভাবেই একজন নারীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রাখেনা। তার ধৃষ্টতার জন্য তাকে কয়েকমাস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পল্লীতে পাঠিয়ে দেয়া হোক। রোহিঙ্গারা হারবাল পদ্ধতিতে টোকাই রাজকে নিয়ে একটু খেলুক। রাজরীপার ছ্যাঁতম্যাত করা রিঅ্যাকশন অতি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। কথা বলার মধ্যে সৌন্দর্য থাকতে হয়,যদি সত্যিকারের সেলিব্রেটি হয়ে থাকে। কিন্তু তার ঝগড়াটে রিঅ্যাকশন যথেষ্ট বিরক্তির উদ্রেক করেছে। কথাবার্তার ধরণ দেখলে বোঝা যায় সে ঝগড়াটে ও চুলোচুলি করা পরিবার থেকে এসেছে। শরীফুল রাজের মত রংবাজকে চলচ্চিত্রের আঙিনা থেকে খেদিয়ে দেয়া উচিত। এমন অশিক্ষিত গোবর্ধন অভিনেতা চলচ্চিত্রে আর কয়জন ঢুকেছে সেটা খুঁজে বের করা উচিত। যে পুরুষ নারীকে সম্মান দিতে জানেনা, সে তার ঘরে ডমেস্টিক ভায়োলেন্স ক্রিয়েট করে হিংস্রতার সাথে। রাজের মত কাপুরুষরাই নারীর গায়ে হাত তুলতে পারে। রাজব্যাটা অতো ফেমাস কেউ নয়। কপাল গুণে “হাওয়া” ছবিতে চঞ্চল চৌধুরীর মত দুর্দান্ত অভিনেতার সাথে কাজ পেয়েছে। সে কোন গোছের অভিনেতা তা তো দেখলাম। রাজরীপার মিডল ফিঙ্গার নিয়ে ভন্ডদের যত মাথাব্যথা। তার মিডল ফিঙ্গার নিয়ে যাদের পশ্চাদদ্দেশে জ্বালাপোড়া হচ্ছে তারা চটজলদি ইসবগুলের ভুষি খান।