পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আশা করেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হস্তক্ষেপ বা সীমিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নেবে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদেরও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, আমরা আগেও বলেছি, ভিসানীতি নিয়ে মানুষ যেন ভুল না বোঝে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে।বিশেষ করে, আমরা গণমাধ্যম সম্পৃক্ততার একটা কথা শুনেছি। যেটা মনে হয় না খুব একটা রাইট চয়েস। সেখানে নিশ্চয়ই আপনাদেরও (গণমাধ্যমকর্মীদের) একটা বক্তব্য আছে। সে দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) রাষ্ট্রদূত কেন এটা বললেন, এটা নিশ্চয়ই সেই দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) খতিয়ে দেখবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা আশা করি তারা (মার্কিন) গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বা সীমাবদ্ধ করে এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না।
চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ঘোষণা করা হয় যে, বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দেশটিতে ভিসা দেওয়া হবে না। সেই ঘোষণার প্রায় চার মাস পর, ২২শে সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, তার দেশ ভিসা নীতি প্রয়োগ করা শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন এর আওতায়।
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ভবিষ্যতে ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমকেও যুক্ত করা হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ভিসা নীতিমালায় যা বলা হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। যারা রাজনীতি করেন, তারা অনেক ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেন, সুতরাং এটা তাদের জন্য কোনো বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় তাদের জন্য যারা বিদেশে গিয়ে আবাস খোঁজেন এবং সুনির্দিষ্টভাবে ওই দেশে যদি কারও কোনো পরিকল্পনা থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিসা নীতি তাদের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। আমরা এটা মেনে নিলাম। কিন্তু আমরা আবারও বলছি, এটা যেন আরবিট্রেশন না হয়। আশা করি, সেই ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমরা জানতে পারব। আমরা সেই বিষয়গুলো গবেষণা করে বোঝার চেষ্টা করব কাদের জন্য এ নীতিটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এবং সেখানে যদি কোনো ব্যত্যয় দেখি, অবশ্যই আমরা মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে জানাব।
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে কত বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন তার পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় যে, কোভি”ড-১৯ এর সময়ে বিধিনিষেধ শিথিল হলেও গত দিন পর্যন্ত আরও বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন যেটা গত বছরের তুলনায় এ বছরে অনেক বেশি।